ইটভাটা গিলে নিয়েছে সরকারি পাঁকা সড়ক, জনসাধারণের চলাচল বন্ধ
1 min readদেখে বোঝার উপায় নেই এই মাটির নিচে কোনো পাঁকা সড়ক আছে। ইটভাটাটি গোটা সড়কই গিলে ফেলেছে। ফলে চার গ্রামের মানুষ চলাচলে ভোগান্তির শেষ নেই। শুকনা মৌসুমে ধুলা আর বর্ষার সময় হাটুকাঁদা মাড়িয়ে তাদের যাতায়াত করতে হয়। এই অবস্থা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাজধারপুর-মদারবাজার সড়কটির।
ভাটা কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছেন, আর অল্পদিন পরেই সব ঠিক হয়ে যাবে। ভাটায় ইট পোড়ানো মৌসুম শেষ হলেই মাটি ফুরিয়ে যাবে। আর স্থানিয়রা বলছেন, এক মৌসুম শেষে আরেক মৌসুমের জন্য আগাম মাটির সংগ্রহ করা হয়। ফলে সারা বছলই থাকে এই মাটির স্তুপ। আর এতোটা উচু করে মাটি রাখা হয়েছে যে একপাশ থেকে অন্য পাশের কিছুই দেখা যায় না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিনাইদহ-শৈলকুপা ভায়া গোয়ালপাড়া সড়কের রাজধরপুর থেকে একটি সড়ক নেমে গেছে পশ্চিমে। কিছুদূর যাবার পর যা দুইভাগে ভাগ হয়েছে। একটি সড়ক গেছে মদারবাজারে, আরেকটি সড়ক গেছে বিজয়পুর গ্রাম অভিমুখে। এই দুই সড়কের মাঝে প্রায় ১৫ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠা করা হয় একটি ইটভাটা। বিভিন্ন সময় যার মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে ঝিনাইদহ শহরের বাসিন্দা মিজানুর রহমান এই ভাটা পরিচালনা করছেন। এস.এম.বি ব্রিকস নামে চলছে এই ভাটাটি।
স্থানিয়রা জানান, ভাটা শুরু দুই সড়কের মাঝে শুরু হলেও ক্রামান্বয়ে সরকারি জায়গা দখল করতে থাকে। বর্তমানে দক্ষিন পাশের সড়কটি দিয়ে কিছুটা চলাচল করা গেলেও পূর্ব পাশের সড়ক দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এই বন্ধ সড়ক দিয়ে ফটিকখালী, রাজধরপুর ও নরহরিদ্রা গ্রাম আর মদারবাজারে যাতায়াত করা মানুষ চলাচল করছে দেড় কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প পথ দিয়ে। শুধুমাত্র পাঁয়ে হাটা আর বাইসাইকেলে কিছু মানুষ কষ্ট করে আর ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ভাটা কর্তৃপক্ষ সরকারি এই সড়কটিকে নিজেদের দখলে নিয়ে মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে।
এলাকার একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে জানান, তারা এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পান না। কোনো কিছু বললেই বলা হয় আমরা গ্রামে এসে ভাটা করলেই শহরে থাকি। বেশি বাড়াবাড়ি করলে শহরে ফেলে হাত-পাঁ ভেঙ্গে দেওয়া হবে। ওই সড়কে কথা হয় ফটিকখালী গ্রামের চাঁদ আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, শুধু এইটুকু বলতে পারবো তাদের কষ্টের শেষ নেই। এর বেশি বলার ক্ষমতা আমাদের নেই। ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা আরব আলী জানান, আপনারা দেখে যান। পরিস্তিতি বুঝে আমাদের জন্য কিছু করেন। আমরা বেশি কিছু বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে স্থানিয় হরিশংকরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল-মামুন ওরফে মাসুম জানান, ইতিপূর্বে এলাকার লোকজন বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে তিনি ভাটা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা মাটি সরিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখনও নেয়নি। তিনি আবারো যোগাযোগ করবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে ভাটার ব্যবস্থাপক নবাব বাশার জানান, মাটি সরিয়ে ফেলার কাজ চলছে। তাছাড়া ভাটা মৌসুম শেষ হলে মাটি থাকে না। তবে এলাকার মানুষের চলাচলের খুব বেশি সমস্যা হয় না। তাছাড়া এলাকার লোকজনের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। কিছু মাটি সরিয়ে নেওয়ার দাবি করেছেণ। যা দ্রুতই এই মাটি সরিয়ে নেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে তিনি দ্রুত দেখবেন জানিয়েছেন।