ঝিনাইদহে ঘুর্ণিঝড় আম্পানে ২ লাখ ২৭ হাজার চাষী ক্ষতিগ্রস্ত
1 min readঝিনাইদহ নিউজ ডেস্ক: ঝিনাইদহে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ঘুর্ণিঝড় আম্পান। রাত ১০টা থেকে শুরু হয়েছে সকাল পর্যন্ত তাণ্ডব চালায় আম্পান। ভেঙেছে গাছ-পালা, বাড়িঘর। ভেসে গেছে খামার-পুকুরের মাছ। সেই সাথে নষ্ট হয়েছে মাঠের পর মাঠের ফসল।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেয়া তথ্য মতে, জেলার ছয় উপজেলায় প্রায় দুই লাখ ২৭ হাজার কৃষক আম্পানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় দেড় হাজার হেক্টর কলা, এক হাজার ২৫ হেক্টর শাক শবজি, এক হাজার ৯৫০ হেক্টর মুগডাল, দুই হাজার ২০ হেক্টরের তিল, ৭৫০ হেক্টর মরিচ, ১০০ হেক্টর বোরো ধান, দেড় হাজার হেক্টর পান বরজ, দুই হাজার ৮৭৫ হেক্টরের আম, ৪১৮ হেক্টরের লিচু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অংকে ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৮৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক রাশেদুল ইসলাম জানান, ঘুর্ণিঝড় আম্পানে তার দেড় বিঘা জমির পান বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। বরজে প্রায় আড়াই লাখ টাকার পান ছিল। বিধ্বস্ত পান বরজ মেরামত করতে এখন প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হবে।
সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের কলাচাষী কাদের মিয়া বলেন, এ বছর তিনি আড়াই বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছিলেন। কয়েকদিন হলো অল্প কিছু কলা বিক্রি করতে পেরেছেন। কলা বিক্রি করে তিনি কমপক্ষে তিন লাখ টাকা আয় করতেন। আম্পানের কারণে তার তিন বিঘা জমির কলাগাছ ভেঙে পড়েছে।
মহেশপুর উপজেলার নাটিমা গ্রামের কৃষক শামীম হোসেন বলেন, আম্পানের কারণে তার মাছের খামারগুলো ভেসে গেছে। এছাড়াও তার ১০ বিঘা জমির কলাক্ষেত নষ্ট হয়েছে। মুলধন হারিয়ে এখন পথে বসেছেন তিনি।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিনুর রহমান বিপুল বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্পানের কারণে শৈলকুপা উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফুলহরি ইউনিয়ন। শুধু এই ইউনিয়ন না। জেলার প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব কৃষকদের তালিকা করে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করলে কৃষকরা একটু হলেও বাঁচতে পারবে। তার সরকারের প্রতি আহ্বান থাকবে, এসব কৃষকদের আর্থিক ভাবে সহযোগিতা যেন করা হয়।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বস বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। পানবরজ, কলাক্ষেত, আম, লিচুসহ অন্যান্য ফসল যা রয়েছে তা সংরক্ষণ ও বিপণণের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও মাঠে মাঠে গিয়ে কৃষকদের শান্তনা দেয়া হচ্ছে।