ভ্রাম্যমান হাঁসের খামার করে স্বাবলম্বী আল আমিন
1 min readঝিনাইদহের মহেশপুরে ভ্রাম্যমান হাঁসের খামার করে আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হয়েছে আল আমিন নামের এক যুবক। কৃষি কাজের পাশাপাশি সে অবসর সময়ে ৪৭০টি হাস পালন করে প্রতিদিন ১ হাজার ৫শ টাকা আয় করছে।
ডিম বিক্রি করে কিনেছে মটরসাইকেল, বর্গা নিয়েছে জমি। নিজে যেমন আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে তেমন এলাকার মানুষের পুষ্টি, আমিষের চাহিদা পুরনে অগ্রনী ভুমিকা পালন করছে সে। আল আমিন মহেশপুর উপজেলার গোকুলনগর গ্রামের আদম বারীর ছেলে।
আল আমিন জানান, পড়াশোনা বেশি দুর করতে না পারায় দত্তনগর গোকুলনগর কৃষি ফার্মে দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কৃষি কাজ করে সে। কৃষি কাজ শেষে করে তার অনেক সময় বেচে থাকে। গত ফেব্রুয়ারী মাসে ভাবে ভ্রাম্যমান হাঁসের খামার তৈরি করবে। চুয়াডাঙ্গার জেলা থেকে ৩৪টাকা দরে ৫০০টি ক্যাম্বেল জাতের হাসের বাচ্চা ক্রয় করে ১৭ হাজার টাকা দিয়ে। এর পর হাসেঁর বাচ্চাগুলো লালন পালন শুরু করে সে।
হাসগুলো মধ্যে ৩০টি মারা যায় ও হারিয়ে যায়। হাসগুলোকে আলাদা করে বেশি খেতে দিতে হয় না। বাড়ির পাশে এশিয়ার বৃহত্তম কৃষিফার্ম রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন সময় ধান, গমসহ অন্যান্য ফসল কাটার পর জমিতে ফসল পড়ে থাকে। এছাড়াও ফার্মের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট একটি খাল। দিনের কাজ শেষে প্রতিদিন বিকালে হাসগুলো নিয়ে মাঠে চলে যায় সে। এর পর মাঠ থেকে হাসগুলো খাইয়ে নিয়ে আবার বাড়িতে আনা হয়।
আল আমিন আরো জানান, হাস পালন করতে হাসের বাচ্চা ক্রয়, হাসের ঘর তৈরি, খাবার, ওষুধসহ তার এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। হাসগুলো গত ৪ মাস ধরে ডিম দিচ্ছে। ইতিমধ্যে সে প্রায় ১লাখ ৬০ হাজার টাকার মতো হাসের ডিম বিক্রি করেছে।
সে জানায় এলাকায় হাসের ডিমের প্রচুর চাহিদা। এখন প্রতিদিন গড়ে ১৩০টি ডিম সংগ্রহ করে। একটি ডিম বিক্রি করে সাড়ে ৯ টাকা দরে। সকলেই বাড়ি থেকে ডিমগুলো বিক্রি হয়ে যায়। তার এখন ৪৭০টি হাস রয়েছে। যার আনুমানিক মুল্য প্রতিটি ৩০০ টাকা দরে ১ লাখ ৪১ হাজার টাকা।
তার সবগুলো হাস একজন ব্যবসায়ী ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা দাম দিয়েছে। তাও সে বিক্রি করেনি। আল আমিন জানান, ভ্রাম্যমান হাসপালন করা সহজ। ছাগল গরুর মতোই এটি বিভিন্ন মাঠে নিয়ে নিয়ে খাইয়ে নিয়ে আসতে হয়। একটি হাস বছরে ১৬০ থেকে ১৮০টি ডিম দিয়ে থাকে। সেই ক্ষেত্রে একটি হাস থেকে ১হাজার ৭শ টাকার ডিম পাওয়া যায়।
গর্ব করে আল আমিন জানান, ডিম বিক্রির টাকা দিয়ে মটরসাইকেল কিনেছি, জমি বর্গা নিয়েছি। হাসের ডিম যেমন পুষ্টিকর তেমনি হাসের মাংস আমিষের চাহিদা মেটাতে পারে। সে আরো জানান, যদি প্রতিটি গ্রামে হাসের ভ্রাম্যমান খামার থাকে তাহলে ঐগ্রামের আমিষের চাহিদা ও ডিমের চাহিদা মিটবে।