এমপি আনার হত্যা ষড়যন্ত্র মামলা আ’লীগ নেতাসহ গ্রেফতার দুই
1 min read
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় আবু সাইদ নামে এক আওয়ামীলীগ নেতা ও কাওছার আলী নামে এক সরকারী চাকুরেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা চেষ্টার অভিযোগে তার ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ বাদী হয়ে বুধবার কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েক জনকে আসামী করা হয়। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, ৩১ অক্টোবর ইউনিয়ন নির্বাচনের দিন রাতে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের নেতাকর্মীরা উপজেলার বুজিডাঙ্গা গ্রাম ঘুরে আসার সময় দুলালমুন্দিয়া গ্রাম এলাকায় পৌছালে আগে থেকে ওত পেথে আসামি সাইদ ও কওছার সহ বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাদের হত্যার উদ্দেশ্যে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় সাহসী নেতাকর্মীরা সাঈদকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে তার স্বীকারোক্তী অনুযায়ী হরিণাকুন্ডু থেকে উপজেলার পরিষদের কর্মচারী কওছার আলীকে আটক করে পুলিশ।
আটকের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসের সার্টিফিকেট সহকারী কাউছার আলী ও নিয়ামতপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদকে এমপি আনার হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা এমপি আনার হত্যার ষড়যন্ত্র করছিলো বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে জানান কালীগঞ্জ থানার এসআই ইমরান হোসেন। পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো জানান, কাওছার আলী এমপি মহদয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত এমন প্রমাণ পেয়ে আমরা তাকে আটক করেছি।
এদিকে কালীগঞ্জ থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, আটক আবু সাইদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বুধবার বিকেলে হরিণাকুন্ডু উপজেলার অফিস সহকারী কাওছার আলীকে আটক করা হয়। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় বিপ্লবী কমিউনিস্ট পাটির হরিণাকুন্ডু উপজেলার কেষ্টপুর গ্রামের আজিজুল হক, যশোরের খাজুরা গ্রামের মিলন ও মাসুম জড়িত। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
এদিকে বুধবার বিকালে সাদা পোশাকের অস্ত্রধারীরা হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসে হানা দিয়ে সার্টিফিকেট সহকারী কাউছার আলীকে তুলে আনেন। সরকারী ওই কর্মচারীকে আটকের সময় হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভিনের অনুমতি নেয়নি পুলিশ। তার অফিস থেকেই পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়। এতে তিনি ক্ষুদ্ধ হন।
এঘটনায় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের বক্তব্য, গত ৩১ অক্টোবর ইউনিয়ন নির্বাচনের দিন রাতে আমি ও আমার কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে বুজিডাঙ্গা গ্রাম ঘুরে আসার সময় দুলালমুন্দিয়া গ্রাম এলাকায় পৌছালে আগে থেকে আসামি সাইদ ও কওছার সহ বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে ঘটনার সামান্য কিছু সময় আগেই আমি হাসপাতালে এক রোগী দেখার উদ্দেশ্যে অন্য একটি পথ দিয়ে বেরিয়ে যায়। ফলে আমি প্রাঁণে বেঁচে যায়। এসময় তারা আমার নেতাকর্মীদের লক্ষ করে গুলিও করে। এসময় আমার সাহসী নেতাকর্মীরা সাঈদকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে তার স্বীকারোক্তী অনুযায়ী হরিণাকুন্ডু থেকে উপজেলার পরিষদের কর্মচারী কওছারকে আটক করে। তিনি আরো জানান, আটককৃতরা স্বীকার করেছেন আমাকে হত্যার জন্য একটি চক্র তাদের সাথে ১৫ লাখ টাকার চুক্তি করেছে। তবে কারা সেই চক্রের সাথে জড়িত তা স্বীকার করেনি আটককৃতরা। সরকার দলীয় এই সাংসদ আনার দাবি করেন, যতদ্রুত সম্ভব আটককৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল গডফাদারদের নাম বেরিয়ে আসবে।
এ দিকে পুলিশ আবু সাঈদকে চরমপন্থী হিসেবে দাবি করলেও তাঁর ছাট ভাই হাসান তা অস্বীকার বলেন, আবু সাঈদ আওয়ামী লীগ নেতা এবং ফরাশপুর কচতালা বাজারের সার ও কীটনাশকের ডিলার।
অপরদিকে সার্টিফিকেট ক্লার্ক মো. কাওছার আলীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি’ ঝিনাইদহ জেলা কমিটি। বিকেলে তাঁর মুক্তির দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে কমিটির নেতারা স্মারকলিপি দিয়েছেন। এতে স্বাক্ষর করেছেন জেলা সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ খান।