কেন শপথ নেননি, জানালেন মির্জা ফখরুল
1 min readঝিনাইদহ নিউজ: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী বিএনপির ৫ সংসদ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী আসনের একজন সদস্য শপথ নিলেও সংসদে যাননি দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নির্বাচিত হয়েও তার সংসদে যোগ না দেয়া নিয়ে দল ও দলের বাইরে দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
দলের অন্যরা শপথ নিলেও মহাসচিব কেন শপথ নেননি এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। মির্জা ফখরুল এর আগে এটিকে ‘রাজনৈতিক কৌশল’ বলে এড়িয়ে গেছেন। তার এই উত্তর সন্তুষ্ট করতে পারেনি দলের নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক সচেতন লোকজনকে। এবার শপথ না নেয়ার প্রকৃত কারণ জানালেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেছেন, এ সংসদ অবৈধ তা জাতিকে জানাতেই আমি শপথ নিইনি। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল দাবি করে বিএনপির বাকি সংসদ সদস্যদের সংসদে যোগদান করার যৌক্তিকতাও ব্যাখ্যা করেন তিনি।
সোমবার বিকালে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনগণকে ভোট বিপ্লব থেকে সরিয়ে দিতে খালেদা জিয়াকে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে এই অবৈধ সরকার। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধানের শীষে ভোট দেয়ার অধীর অপেক্ষায় ছিলেন এ দেশের মানুষ। কিন্তু পিস্তল ঠেকিয়ে জনগণের ভোটউৎসব ডাকাতি করেছে আওয়ামী লীগ ও তাদের পেটুয়া বাহিনী।
মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকা থেকে বিশেষ বাহিনী আনা হয়েছিলো শুধুমাত্র আমাকে ভোটে হারিয়ে দেয়ার জন্য।
তিনি বলেন, নির্বাচন হয়ে গেলেও এ নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। তবে ঠাকুরগাঁর রাণীশংকৈল উপজেলার কিছু মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন শুধুমাত্র সাংগঠনিক শক্তির কারণে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনলাইন ও সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও বিভ্রান্ত ছড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের দলীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমানের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ও আনুগত্য উপেক্ষা করে তিনি জাতীয় সংসদে গিয়ে শপথ নিয়েছেন। বিএনপি তাকে শপথ না নেয়ার জন্য বলা হয়েছিলো। কিছুদিনের জন্যও অপেক্ষা করেননি তিনি।
তার বহিষ্কারের আদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাহিদুর রহমানের প্রতি বিএনপির যথেষ্ট সহানুভূতি ছিল। কিন্তু তিনি ধৈর্য না ধরে তড়িঘড়ি করে সংসদে গিয়ে শপথ নিয়েছেন। তবে দলের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের পর তার বহিষ্কারাদেশ বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সরকারের দমন-নিপীড়নে বিএনপি রাজপথে দাঁড়াতে পারছে না। সভা-সমাবেশ আয়োজন করলেও তা ভণ্ডুল করে দিচ্ছে স্বৈরাচার এই সরকার। তিনি আবারও নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধারক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করেন।
রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক শাহজাহান আলীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ হক মাসুদ, জেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, হোসেনগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আইনুল হক প্রমুখ।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে শপথ না নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হওয়া এই জনপ্রতিনিধি।
ওইদিন তিনি বলেন, ‘আমি শপথ নেইনি। এটিও দলীয় সিদ্ধান্ত ও আমাদের কৌশল।’
সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার জন্য সময় বাড়াতে সংসদে কোনো আবেদন করেননি জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে আমি নাকি সময় চেয়ে আবেদন করেছি। আসলে আমি কোনো চিঠিই দিইনি। সময়ও চাইনি। এটিও আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। এটি আমাদের কৌশল।
‘আমাদের সুযোগ ন্যূনতম কাজে লাগাতে চাই, এ কারণে দলের নির্বাচিতরা শপথ নিয়েছেন।