Sun. Dec 22nd, 2024

ঝিনাইদহ নিউজ

সবার আগে সর্বশেষ

ঝিনাইদহের অহংকার মিতা রানী বিশ্বাস

1 min read
ঝিনাইদহের অহংকার মিতা রানী বিশ্বাস

ঝিনাইদহের অহংকার মিতা রানী বিশ্বাস

ঝিনাইদহের অহংকার মিতা রানী বিশ্বাস
ঝিনাইদহের অহংকার মিতা রানী বিশ্বাস

ছয় বছর ধরে গাড়ির স্টিয়ারিং নিখুঁতভাবে সামলে অনেকবার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশংসা পেয়েছেন পুলিশ কনস্টেবল মিতা রানী বিশ্বাস। এখন মিতার স্বপ্ন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়ে শান্তিরক্ষীদের গাড়ি চালানো।

ঝিনাইদহের চাকলাপাড়ার মদনমোহন বিশ্বাসের মেয়ে মিতা রানী বিশ্বাস। বাবা একজন চাল ব্যবসায়ী ও মা অঞ্জলী রানী বিশ্বাস গৃহিণী।

মিতা রাণীর বাবা মদনমোহন বিশ্বাস জানান, চার বোনের মধ্যে মিতা তৃতীয়। ঝিনাইদহ দুর্গাপুর হাইস্কুল থেকে ২০০৫ সালে এসএসসি পাস করেন। এইচএসসি ভর্তি হন ঝিনাইদহ সিটি কলেজে। কলেজে পড়ার সময় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখেন নারী পুলিশ কনস্টেবল পদে জনবল নেয়া হবে। মেজ বোন রত্না রানী বিশ্বাসের সহযোগিতায় তিনি পুলিশ কনস্টেবল পদে আবেদন করেন।

২০০৭ সালের ২০ জানুয়ারি মিতা বিশ্বাস ডিএমপিতে যোগদান করেন। চাকরিতে যোগদানের কারণে তার এইচএসসি পরীক্ষা আর দেয়া হয়ে ওঠেনি। কিন্তু পড়ালেখার প্রতি অদম্য আগ্রহের কারণে বিভাগীয় অনুমতি নিয়ে তিনি ঝিনাইদহ সিটি কলেজ থেকে প্রাইভেটে এইচএসসি পরীক্ষা দেন। এরপর প্রাইভেটে ঝিনাইদহ কেসি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন।

ঝিনাইদহের অহংকার মিতা রানী বিশ্বাস
ঝিনাইদহের অহংকার মিতা রানী বিশ্বাস

বর্তমানে তিনি ঢাকা ইডেন কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএস করছেন। এরই মধ্যে কনস্টেবল মিতা মনোনীত হয়েছেন কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নারী কন্টিনজেন্টের সদস্য হিসেবে কাজ করার। কঙ্গো যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন তিনি।

পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেওয়ার পেছনের গল্পটা জানালেন এই কৃতী নারী।

তিনি জানান, ঝিনাইদহ জেলায় একসময় প্রতিদিন খুন হতো। সর্বহারা পার্টির আতঙ্কে এলাকাবাসী ঠিকমতো ঘুমাতে পারত না। এরপর সর্বহারা পার্টির বিরুদ্ধে ঝিনাইদহে কঠোর অভিযান শুরু করে পুলিশ-র্যাব। এলাকার পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত হয়। সর্বহারা পার্টির নির্যাতন দেখে পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের আগ্রহ হয় তার। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হয়ে এলাকার লোকজনের নিরাপত্তার জন্য কিছু করার ইচ্ছা তার।

পুলিশ সপ্তাহ-২০১৬ উপলক্ষে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে বার্ষিক প্যারেড পরিদর্শনে গাড়ি চালানোর দায়িত্ব পড়ে মিতার ওপর। মিতা এখন ইতিহাসের অংশ। তার জন্য গর্ব করছে গোটা পুলিশ বাহিনী। বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সফলভাবে প্যারেড পরিদর্শন গাড়ি চালিয়েছেন কোনো নারী পুলিশ।

ওই দিন কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে গাড়ি থেকে নেমেই প্রধানমন্ত্রী চালক মিতার পাশে গিয়ে বললেন, `তুমি অনেক সুন্দর গাড়ি চালিয়েছ। থ্যাঙ্ক ইউ।`

২০০৭ সালে পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল হিসেবে যোগ দেন তিনি। ২০০৯ সালে ডিএমপির ট্রান্সপোর্ট শাখায় তার স্থায়ী পোস্টিং হয়। ওই সময় ঢাকা মহানগর পুলিশের ১৫ জন নারী কনস্টেবলকে গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। পরে ১৪ জনই পদোন্নতি পেয়ে অন্য বিভাগে চলে যান। মিতা একাই গাড়িচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বার্ষিক প্যারেডে গাড়ি চালানোর দায়িত্ব পালনের জন্য তাকে নির্বাচিত করার পর কয়েকদিন চলে মহড়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *