Sat. Dec 21st, 2024

ঝিনাইদহ নিউজ

সবার আগে সর্বশেষ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু

1 min read
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু

সৌখিন ফল চাষি বোরহান উদ্দিন (৪৫) এলাকায় এবার চমক লাগিয়ে দিয়েছেন। ১ বিঘা (৩৩শতাংশ) জমিতে ব্যতিক্রমী ফল ড্রাগন চাষ করে নজর কেড়েছেন অনেকের। ড্রাগনের চাষ ইতিপূর্বে কখন ও হয়নি এ এলাকায় । ড্রাগনের ধবধবে সাদা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভোর বেলা ক্ষেতের পাশে এলাকার মানুষ ভীড় জমায়। ড্রাগনের ফুল রাতে ফুটে ভোরের আলোতেই নষ্ট হয়ে যায়। বিদেশী এই ফল চাষে এলাকায় রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছেন বোরহান উদ্দিন। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে উপজেলার নিশ্চিনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন কালীগঞ্জ উপজেলার খামার মুন্দিয়া গ্রামের মাঠে গত বছর ১ বিঘা জমিতে ৫৮০টি ড্রাগনের চারা রোপন করেছিলেন। সঠিক পরিচর্যা করায় ১৬ মাসে গাছে পরিপুষ্ট ফল এসেছে। রফতানিযোগ্য এই ফলের ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সম্ভবনা নিয়ে আশাবাদী এ সৌখিন ফল চাষি প্রথম বছরই লাভের আশা করছেন।
বোরহান কালীগঞ্জ উপজেলার ইউনিভার্সেল পোল্ট্রি হ্যাচারীজ লিঃ এর মাকের্টিং ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সেই সুবাদে উক্ত প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কৃষিবিদ ড. রুস্তম আলীর পরামর্শ পান। তারই পরামর্শে ও সহযোগিতায় ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে উপজেলার খামার মুন্দিয়া গ্রামের মাঠে এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। তিনি জানান ড. রুস্তম আলী গত বছর ময়মনসিংহ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্ম থেকে তাকে ৫৮০টি ড্রাগন চারা এনে দেন। তার নির্দেশিত চাষ পদ্ধতি অনুসরন করে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই গাছে ফল এসেছে। বোরহান জানান, বছরের যেকোন সময়ই গ্রীষ্মকালীন এ ফলের চাষ করা যায়। সাধারণত জুলাই আগষ্টে ফল পাকতে শুরু করে। ফুল আসার ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মাথায় ফল পেকে যায়।
একটি পরিপুষ্ট পাকা ফলের ওজন প্রায় ৩’শ থেকে ৪’শ গ্রাম ওজন হয়। এক নাগাড়ে প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস ফল সংগ্রহ করা যায়। বোরহানের ১বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করতে জমি প্রস্তুত, সার, ঔষধ, সেচ, সিমেন্টের পিলার, মটর সাইকেলের টায়ার পরিচর্যা বাবদ প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি জানান, গাছে যেভাবে ফল এসেছে তাতে এক বিঘা জমিতে প্রায় ৫’শ থেকে ৬’শ কেজি ফল পাওয়া যেতে পারে। প্রতি কেজি ফল ৪’শ টাকা দরে বিক্রি হলেও এ বছরে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা লাভ পেতে পারেন বলে জানান তিনি। ড্রাগনের চারা এক বার রোপন করলে ১৫-২০ বছর পর্যন্ত এক নাগাড়ে ফল দেয়। সেক্ষেত্রে ২য় বছর থেকে চাষ বাবদ খরচ একেবারেই কম লাগে। এ কারণে এ ফল চাষ যথেষ্ঠ লাভজনক হবে বলে তিনি আশাবাদি। এবছরে নিজের উৎপাদিত ১ হাজার চারা ড. রুস্তম আলী কাছে বিক্রিও করেছেন। প্রতিটি চারার বাজার দর ৬০/৭০টাকা । আগামী বছরে ঝিনাইদহ জেলা ব্যাপী এ ফলের চাষ ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষে বেশ কিছু চারা উৎপাদন করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানান, বাংলাদেশে এ ফলের চাষ এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। কালীগঞ্জ উপজেলায় বোরহান ও স্বপন নামের ২ জন চাষী ক্যাটকাস প্রজাতির এ ফলের চাষ শুরু করেছেন। অধিক পুষ্টি গুন সম্পন্ন এ ফল চোখকে সুস্থ্য রাখে, শরীরের চর্বি কমায়, রক্তের কোলেস্টেরল কমায়, উচ্চ রক্তচাপ কমানোসহ রোগ প্রতিরোধ করে। এছাড়া এ ফল ডায়াবেটিস রোগীর ভাতের পরিবর্তে এ ফল প্রধান খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা যায় বলে অচিরেই এ ফলের স্থানীয় বাজার সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে ফল বিক্রির ব্যবস্থা করা গেলে এ ফল চাষে কৃষকেরা লাভবান হবেন বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *