ঝিনাইদহে আবাসিক এলাকায় বানিজ্যিক পোল্ট্রী ফার্ম বর্জ্য আর দুর্গন্ধে এলাকার জীবনযাত্রা অচল
1 min readঝিনাইদহ নিউজ: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় আবাসিক এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে বৃহৎ পোল্ট্রী ফার্ম । আর এই ফার্মের বর্জ্য ও দুর্গন্ধে এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে । কিন্তু অভিযোগ দিয়েও মিলছে না প্রতিকার । অভিযোগ উঠেছে ফার্মের মালিকগন প্রভাবশালী হওয়ায় ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে সকল অভিযোগ । এছাড়া দখল করা হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেনেলের জায়গাও ।
সরেজমিনে দেখা গেছে ,শৈলকুপা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের হাবিবপুর গ্রামে রয়েছে এক চিলতে সবুজ মাঠ । আর এই ঘনবসতি গ্রামটির মাঠেই জননী পোলট্রি ফার্ম নামে ৬ বছর আগে গড়ে তোলা বৃহৎ আকারের বানিজ্যিক পোল্ট্রী ফার্ম । ৮টি শেডের এই ফার্মে লেয়ার (ডিম), বাচ্চা ও মুরগীর বানিজ্যিক চাষ করা হয় । তবে গ্রামবাসীর অভিযোগ জাতীয় পোলট্রী উন্নয়ন নীতিমালা-২০০৮ না মেনেই চলছে ফার্মের কার্যক্রম। নেই পানি নিষ্কাষন আর বর্জ্য অপসরণের ব্যবস্থা । হাবিবপুর গ্রামের কৃষক বাবলু মিয়া জানান, বাতাস এলেই দুর্গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে, এতে ঘরে-বাড়িতে বসত করা দায় হয়ে পড়ে । গ্রামের অপর কৃষক লিয়াকত হোসেন জানান, কৃষি জমিতে যেতে পারেন না দুর্গন্ধের কারণে । গৃহবধু সোহাগী খাতুন জানান, মাছির কারণে ঘরে রান্নার কাজ করা যায় না । এছাড়াও পর্যাপ্ত মাছি ভাতের উপর পড়ায় আমরা ভাত খেতে পারি না। অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশু সহ বয়সের মানুষ । আব্দুল লতিফ জানান, পোলট্রি ফার্মের পাশে থাকা জমির ফসল আমরা কাঁটতে পারছি না। প্রতি বিঘা জমির পাট কাটতে কামলাদের ৪-৫ হাজার টাকা কৃষকের গুণতে হচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ ইউএনও, জেলা প্রসাশক ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ বিভিন্ন দপ্তরে একের পর এক লিখিত অভিযোগ দিয়েও পাচ্ছে না কোন প্রতিকার । তারা বাড়ি-ঘরে বসত করতে পারছে না মাছির উৎপাত আর দুর্গন্ধে। যেখানে-সেখানে ফেলে রাখা হচ্ছে এসব বানিজ্যিক ফার্মের দুষিত বর্জ্য, মরা মুরগী আর গন্ধে কৃষকেরা আবাদ করতে পারছে না ফার্ম এলাকার কৃষি জমি । হাবিবপুর গ্রামের আফতাব উদ্দিন জানান গ্রামবাসীর নানা অভিযোগ ওই বৃহৎ জননী পোলট্রি ফার্ম নিয়ে । বর্তমানে ফার্মের দূষিত বর্জে গন্ধে বসবাস করায় দুষকার হয়ে পরেছে।
এদিকে অভিযোগ ওঠা ফার্মের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ অঞ্চলের দায়িত্বরত সেকশন অফিসার বিকর্ণ। তিনি জানান খালের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ হয়েছে, কাটা হয়েছে পুকুর ।
অন্যদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি পত্র না থাকার কথা স্বীকার করে ফার্মের মালিক শিক্ষক নবীনুর রহমান বলছেন গ্রামের পাশে মাঠে নির্মিত হয়েছে এ ফার্মটি । আর এলাকাবাসী অভিযোগ দেয়ায় বর্জ্য ব্যবস্থা আধুনিক করা হচ্ছে । এলাকাবাসীর সমস্যা হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।
আর প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের শৈলকুপার কর্মকর্তারা নিজেরাই বলতে পারেননি কি কি শর্ত পুরণ করে রেজিস্ট্রেশনের অনুমতি নিতে হয়। উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারী ফিল্ড অফিসার শফিকুল ইসলাম বলছেন, ফর্মে তথ্যাদি দেয়া আছে, সেগুলো পুরণ করতে হয় তবে কি কি তথ্য বা করণীয় তা তিনি জানাতে পারেননি।
অন্যদিকে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উসমান গনি বলছেন আবাসিক এলাকায় ফার্ম সম্পর্কে লিখিত অবিযোগ এসেছে । তদন্ত ও শুনানী করে যদি জানা যায় এলাকাবাসী ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তবে বানিজ্যিক ফার্মটি অন্যত্র সরিয়ে নেবার আহব্বান জানানো হবে না সরালে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।