ঝিনাইদহে বাউকুল রক্ষায় কারেন্ট জাল ব্যবহার করে অবাধে দেশীয় প্রজাতির পাখি নিধন॥ ধ্বংসের মুখে জীব বৈচিত্র
1 min readচারিদিকে কারেন্ট জাল ব্যবহার করায় প্রতিদিন অবাধে মারা পড়ছে দেশীয় প্রজাতির নানা পাখি। উচ্চ ফলনশীল, সুস্বাদু রসালো ফল বাউকুল রক্ষায় বাগানে কৃষকেরা ব্যবহার করছে কারেন্ট জাল ।
তবে এ সুস্বাদু ফল গ্রাহক পর্যায়ে পৌছাতে যে নির্মমতার আশ্রয় নেয়া হচ্ছে তা জানলে সচেতন মানুষের রসনা বাধাপ্রাপ্ত হবে। পাখির হাত থেকে বাউক’ল ক্ষেতের ফল ও ফসল রক্ষায় ঝিনাইদহে প্রতিবছরই কারেন্ট জাল( সুক্ষ জাল) ব্যবহার করে আসছে খামারী ও কৃষকেরা । বাউক’ল বাগানের চারিদিকে মাটি থেকে ৩০/৩৫ ফুট উচ্চতায় কারেন্ট জালে ঢেকে রাখে । আর সিনথেটিক সূতার তৈরী সুক্ষ জালে প্রতিদিন আটকে মারা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় পাখি। এভাবে পাখি মারা পড়ায় ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ, জীববৈচিত্র নিয়ে সংশয়ে পড়েছে সচেতন মহল। তারা পাখি নিধন বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে।
বাউক’ল ক্ষেতে বাগানের পর বাগান চারিদিকে শুক্ষ কারেন্ট জালের ফাঁদ। পাখি যাতে বরই খেতে না পারে তাই এ ব্যবস্থা। কিন্তু পাখি তো আর মিহি জাল সম্পর্কে সচেতন নয়। তারা অবাধে এসে গাছের ডালে বসতে বা উড়তে গিয়ে আটকে যাচ্ছে। শত চেষ্টা করেও মুক্তি নেই। অনেক পাখিই আছে; বাউকুল বা ফল খাওয়া যাদের অভ্যাস নয়। অথচ জালের ফাঁদে পড়ে মুক্ত আকাশে নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছে –
ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় ১৮০ হেক্টর জমিতে ২শতাধিক বাউকুল ,বেগুন সহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতের জালে জড়িয়ে জাতীয় পাখি দোয়েল, কবুতর, ঘুঘ,ু বুলবুলি, লক্ষীপেচা, ডাহুক সহ হরেক রকম পাখি প্রতিনিয়ত মরছে। । শালিখ, বাদুড়, চড়–ই সহ ছোট পাখিগুলোও প্রাণ হারাচ্ছে। । বিলুপ্তপ্রায় কিছু বন্যপ্রাণীও প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে এই ফাঁদে। বাগানজুড়ে ঝুলে থাকছে অসংখ্য মৃত পাখপাখালি।
এভাবে পাখি নিধনে উদ্বেগ প্রকাশ করছে জেলার সচেতন মানুষেরা। ঝিনাইদহ জেলা জীববৈচিত্র সংরক্ষন কমিটির সভাপতি মাসুদ আহমেদ সঞ্জু জানান, পাখি নিধনের ফলে ফল ফসলের পরাগায়ন সহ জৈবিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হবে। পাখি নিধনকারী বরই মালিকদের বরই রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। তারা সরকারের নিকট এসব রোধের দাবি জানালেন ।
শৈলকুপা উপজেলার দুধসর গ্রামের কুল চাষী আব্দুল আজিজ জানান, পাখিদের কারনে
ব্যাপক ক্ষতির শিকার হতে হয়, তাই বাধ্য জাল ব্যবহার করতে হয়, তিনি স্বীকার করেন এভাবে পাখি মারা য্ওায়ায় জীববৈচিত্র ক্ষতিগ্রস্থ পরিবেশ ভারসম্য হারাচ্ছে, কুল রক্ষায় বিকল্প পথ খোজা হবে বলে জানান। চলতি মৌসুমে জেলায় ১৮০ হেক্টর জমিতে বাউ ও আপেল কুলের চাষ হয়েছে।
কারেন্ট জাল ব্যবহারে পাখি মারা যাওয়ায় পরিবেশের উপর প্রভাব পড়ছে। কৃষি অফিস সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর মাধ্যমে বিষয়টি প্রতিরোধের দাবি এলাকাবাসীর।