ঝিনাইদহে মাদক ব্যবসায়ীরা দিনে দিনে ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছে
1 min readঝিনাইদহে মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সামাজিক ভাবে বয়কট করা হয়নি। জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য বড় আকারের প্রচারনা ও চলেনি। উল্টো মাদক ব্যবসায়ীরা দিনে দিনে ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখা) থেকে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী জেলার সেরা ১৭ চোরাকারবারি ও ৬ জন গডফাদার অধরা রয়ে গেছে। গত বছরের ৩১ জানুয়ারি জারি করা ওই আদেশ কাজে আসেনি।
স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতায় পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। গত বছরের ৩১ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (মাঠ প্শাসনসংযোগ অধিশাখা) থেকে ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ, মহেশপুর ও কোটচাঁদপুরের মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ১৭ জন অসাধু ব্যক্তিবর্গ এবং গডফাদার ও আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা ৬ জনের নামের একটি তালিকা প্রেরন করা হয়। উপসচিব মো. শাফায়াত মাহবুব চৌধুরীর স্বাক্ষর করা গোপনীয় ওই পত্রটি ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়। তার আলোকে তালিকা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গত বছরের ২৪ ফেব্রয়ারি ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব আলম তালুকদার সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বরাবর পত্র পাঠান। যুগান্তরের অনুসন্ধানে বেরিয়ে পড়েছে তাদের নাম ও পরিচয়।
তালিকায় মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদার ও আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতার নাম রয়েছে। এরা হল- কোটচাঁদপুরের আখ সেন্টারপাড়ার মোমিন পাঠানের ছেলে পৌর কমিশনার রেজাউল পাঠানসহ অনেকেই ।তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের আটক করার বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ছাদেকুর রহমান বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখার থেকে পাঠানো তালিকার বিষয়ে জানা নেই তার। তবে গত দুই মাসে মাদক বিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৭-৮ জনকে দুই মাস করে কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেছেন আশাফুর রহমান বলেন, চিঠি পাওয়া মাত্রই থানার অফিসার ইনচার্জকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তবে একবছর পেরিয়ে গেলেও কি ধরনের ব্যবস্থা পুলিশ গ্রহন করেছে, তা জানা নেই তার । তিনি আরও বলেছেন বিভিন্ন সময়ে মাদক বিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলেও তালিকাভুক্ত কাওকে গ্রেফতার কিংবা আটক করা যায়নি। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, মাদক ব্যবসায়ীরা দিন দিন অধিক প্রভাবশালী হয়ে উঠছে। তারা জনপ্রতিনিধিসহ ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পদেও নির্বাচিত হচ্ছে। এতে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অসাধু ব্যক্তিরা আইনের কাছে অধরাই থাকছেন।
ঝিনাইদহ সদর, কালিগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, হরিণাকু-ু, মহেশপুর উপজেলার প্রধান সড়ক থেকে সরু গলি, বস্তি থেকে শপিংমলের ছাদ সবখানেই মদ, গাঁজা, ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিলের আসর বসে থাকে। ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে এ অঞ্চলে বিরামহীন ভাবে চলছে মাদকের এই কারবার। সরকার আসে, সরকার যায়, কিন্তু পরিবর্তনের ছোঁয়া পড়ছে না। রীতিমতো ‘ওপেন সিক্রেট’ ভাবেই মাদক ব্যবসায়ীরা রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।