ঝিনাইদহে র্যাবের অভিযানে ২ জঙ্গী আটক, বোমাসহ বোমা তৈরীর সরঞ্জাম উদ্ধার
1 min read
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামে সেলিম হোসেন ও প্রান্ত নামের দু ব্যক্তির বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এ অভিযান চলে। র্যাব সদস্যরা নব্য জেএমবির ২জন সদস্য চুয়াডাঙ্গা গ্রামের আত্তাব উদ্দিনের ছেলে সেলিম (৩৫) ও মতিয়ার রহমানের ছেলে প্রান্ত (১৭) কে আটক করে। আটক সেলিম গত ৭ মে মহেশপুরের বজরাপুরে জঙ্গী আস্তানায় পুলিশের গুলিতে নিহত তুহিনের বড় ভাই এবং প্রান্ত তার চাচাতো ভাই। এ সময় তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়ির পাশের ৪টি স্পট থেকে মাটি খুড়ে ২টি সুইসাইডাল ভেস্ট , ১৮৬টি পিভিসি স্টীক সুইচ, ৩০টি বোমা তৈরির ইলেকট্রিক সার্কিট, ২০টি ডিনামাইট স্টীক (হাই এক্সুসিভ), ১৮টি নিউজেল, ৪টি ড্রাম রাসায়নিক দ্রব্য ও ৪টি বোমা উদ্ধার করে র্যাবের বোম ডিসপোজাল ইউনিট। বিকাল ৬ টা পর্যন্ত ৪টি স্পটে এ অভিযান চলে। অভিযান মঙ্গলাবারের মতো স্থগিত করা হযেছে। বুধবার আবার সেলিমের বাড়িতে অভিযান শুরু হবে। মঙ্গলবার অভিযান শেষে বিকালে খুলনা র্যাবের সিও খন্দকার রফিকুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিনাইদহ র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মনির আহমেদ, স্কোয়াড কমান্ডার এএসপি আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে সদর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামে অভিযান চালিয়ে নব্য জেএমবির সদস্য প্রান্ত ও সেলিমকে আটক করে। এর পর তাদের ২টি বাড়ি আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সোমবার রাত থেকে ঘিরে রাখে। সেলিম ও প্রান্ত এর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়ির পাশে ওহাব বিশ্বাসের বাশবাগানে তারা ৫টি স্পট বিস্ফোরক রেখেছে বলে র্যাবকে জানায়। মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খুলনার র্যাবের বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসে প্রান্তর বাড়ি ও অন্য ৩টি স্পটে অভিযান চালিয়ে ২টি সুইসাইডাল ভেস্ট, ৪টি বোমা,৩০ টি বোমার তৈরির সার্কিট,২০টি ডিনামাইট স্টীক (হাই এক্সুসিভ), ১৮৬ টি পিভিসি স্টীক সুইচ, ৪ ড্রাম রাসায়নিক দ্রব্য উদ্ধার করে। তিনি আরো জানান, আজকের মতো অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৭ মে মহেশপুর উপজেলার এসবিকে ইউনিয়নের বজরাপুর গ্রামে জঙ্গী আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি সারারাত ঘিরে রাখার পর ভোরে অভিযানে গেলে আব্দুল্লাহ নামের এক জঙ্গী আত্মঘাতি বোমা বিস্ফোরনে নিহত হয় এবং পুলিশের সাথে গোলাগুলিতে তুহিন নামের এক জঙ্গী নিহত হয়। এ সময় সিটিটিসি এর এডিসি নাজমুল হাসান, এসআই মুজিবুর রহমান ও এস আই মহাসিন জঙ্গীদের গুলিতে আহত হয়। এ সময় পুলিশ জঙ্গী আস্তানার বাড়ির মালিক নব্য জেএমবির সদস্য জহুরুল ও তার ছেলে জসিমকে আটক করে। এর পর বিকালে ওই বাড়ি থেকে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) সদস্য বাড়ি থেকে বিস্ফোরক,পিস্তল, গুলি উদ্ধার করে। ঐ অভিযানের নাম দেওয়া হয় “ সাটল স্পীল্ট ” একই দিন সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামে মৃত শরাফত হোসেনের বাড়িতে জঙ্গী আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এ সময় তার শরাফত হোসেনের ছেলে নব্য জেএমবির সমন্বয়ক শামিমকে আটক করে। পুলিশ ঐ বাড়ি থেকে ৮টি বোমা,১টি পিস্তল,৬টি গ্রেনেড উদ্ধার করে। এর আগে গত ২২ এপ্রিল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের ঠনঠনেপাড়ায় জাঙ্গী আস্তানায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট জঙ্গী আস্তানা সন্দেহে একটি নব্য জেএমবির নেতা আব্দুল্লাহর বাড়ি ঘিরে রাখে। এর পর অভিযান শেষে রাসায়নিক ভর্তি ২০টি কন্টেনার, ১টি পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন, ৭ রাউন্ড গুলি, বিপুল পরিমানের বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করে। ঐ অভিযানের নাম দেওয়া হয় “সাউথ প”। অপারেশন শেষে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন ঐ বাড়িটি জঙ্গীদের বোমা তৈরির কারখানা হিসেবে ব্যবহৃত হতো।