ঝিনাইদহ জেলার চাষিরা ব্যস্ত সমাই পারকরছে খেজুরের রস সংগ্রহে
1 min readপ্রকৃতিতে এসে গেছে শীতের আমেজ। সকাল-সন্ধ্যা নিয়ম করেই ‘প্রকৃতির ঘোমটা’ কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে মেঠোপথ। আর এর মধ্যেই শীতের উপাদেয় খাবার খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে গেছেন খেজুর রস সংগ্রহকারী চাষীরা।
ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার ৪ শতাধিকের বেশি খেজুর গুড় চাষী এখন দিনের বেশির ভাগ সময় কাটান গাছে গাছে। যেন মাটিতে পা ফেলার সমাই টুকু নেই অভাবী এ মানুষদের।‘গাছই তাদের কাছে অন্নদাতা। তাকে যতœ-আত্তি না করলে কি রস মিলবে? আর রস না মিললে গুড়ও হবে না, হবে না সুসাদু পাটালি।
তখন তো না খেয়ে থাকতে হবে বাপু’,এক নিশ্বাসে কথাগুলো বললেন সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের বংকিরা গ্র্রামের চাষী বাবলু বিশ্বাস। তিনি বলেন, শীত আসা মাত্রই আমরা খেজুর গাছ ‘তোলার জন্য’ সকাল-সন্ধ্যা লেগে আছি। খেজুর গাছ আগের থেকে অনেক কমে গেছে। আগের মতো এখন বেশি রস সংগ্রহ হয় না। তবু বাবলু বিশ্বাস এবার প্রায় এক পণ (৮০টি) খেজুর গাছ ইতোমধ্যে তোলা ও চাঁছার কাজ শেষ করেছেন। রস জ্বাল দিতে যে পরিমাণ জ্বালানির প্রয়োজন তা পাওয়া যায় না আক্ষেপ করে বাবলু বিশ্বাস জানান, যা আছে তা দিয়েই আমার পেশা চালিয়ে যাচ্ছি।
বছরে পাঁচ মাস খেজুর গাছ কেটে রস সংগুহ করে তা জ্বালিয়ে গুড় বানিয়ে বাজারে বিক্রি করি।‘এটা দিয়ে কীভাবে চলে পরিবার’ এমন পুশ্নের জবাবে বাবলু বিশ্বাস বেশ একটু মুচকি হাসি দিয়েই বলেন, পরিবার নিয়ে চলে যায়। কষ্ট হয় না? খেজুর গাছ চাষীদের সঙ্গে আলাপ করে আরও জানা গেছে, কার্তিকের শুাং থেকেই তারা খেজুর গাছ তোলা ও পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
এটাই উপযুক্ত সময়। ফাল্গুন মাসের শেষের ’গুড় বিক্রির মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ প্রক্রিয়া। সরেজমিনে জেলার সদর কালীগঞ্জ কোটচাদপুর ও হরিণাকুন্ডু উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই ব্যস্ত চাষীরা দা, ঠুঙি, দড়ি ও মাটির কলস (ভাড়) নিয়ে ছুটছেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে। তাদের প্রক্রিয়াজাত করা খেজুরের গুড়, পাটালি বা রস দিয়ে কয়েকদিন পরেই মুখরোচক পিঠা, পুলি, পায়েস তৈরির ধুম পড়বে গ্রামের গৃহস্থ বাড়িতে।
শুধু কি তাই? খেজুরের গুড় বা রস দিয়ে তৈরি মুড়ি, চিড়ার মোয়া শীতের সকালে লেপমুড়ি দেওয়া খাওয়ার মজা তো উপভোগ করেন আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই।