ঝিনাইদহ শিশু হাসপাতাল ১২ বছরেও চালু হয়নি
1 min readআমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর ফাইল চালাচালির একযুগ পরও চালু হয়নি ঝিনাইদহ ২৫ শর্য্যার শিশু হাসপাতাল। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহƒত থাকায় হাসপাতালের আশপাশে জঙ্গলে ভরে গেছে। চুরি হচ্ছে যাচ্ছে হাসপাতালের দরজা, জানালাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। এছাড়া দেয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল। এদিকে শিশু হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় শিশু রোগীর চাপ বাড়ছে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। হাসপাতালটি চালুর দাবিতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন, সভা-সেমিনারসহ নানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে প্রেসক্লাব, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়ের পাশে ৩ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় ২৫ বেডের আধুনিক শিশু হাসপাতাল। জেলার ৬টি উপজেলার শিশু রোগীদের কথা চিন্তা করেই এটি নির্মাণ করা হয়। জমি অধিগ্রহণ বাবদ ৮৮ লাখ ও ভবন নির্মাণে ৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়।
২০০৬ সালের ৩০ এপ্রিল শিশু হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। পরে একই বছরের বছর ৬ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এটি উদ্বোধন করেন। এরপর ৩০ আগস্ট ভবনটি স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীকালে ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব নুরুন নবী চৌধুরী শিশু হাসপাতালটিতে চিকিৎসকসহ ১৮টি পদ সৃষ্টির প্রজ্ঞাপন জারি করেন। প্রজ্ঞাপন জারি করেও ওই বছরে স্বাস্থ্য বিভাগ জনবল নিয়োগ দিতে পারেনি। ওই বছর উদ্বোধনের সময় দু’জন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার দিয়ে আউটডোর চালু করা হয়। সেখান থেকে কোনো ওষুধ দেয়া হয় না। সদর হাসপাতালের একজন চিকিৎককে ডেপুটেশনে হাসপাতাল দেখভাল করার দায়িত্ব দেয়া হলেও তিনি সেখানে ঠিকমতো যান না। এদিকে হাসপাতালের যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কিছু যন্ত্রাংশ পার্শ্ববর্তী মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট ট্রেনিং সেন্টার ও এক্সরে মেশিন সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের আশপাশে জঙ্গলে ভেরে গেছে। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় হাসপাতালের কন্সট্রাকশন মেনটেন্যান্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের বারান্দা ধসে পড়েছে। ময়লা-আবর্জনা ভরা জরাজীণ শিশু হাসপাতালের লোহার গ্রিল, দরজা, জানালা, কাচের গ্লাস ভেঙে গেছে। চুরি হয়ে গেছে মূল্যবান বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম। নষ্ট হচ্ছে মেশিন ও যন্ত্রাংশ। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ফাল্গুনি রানী সাহাকে ডেপুটেশনে শিশু হাসপাতালের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি সেখানে সময় দিতে না পারায় মাত্র দু’জন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শহিদুর রহমান ও রোখসানা ওয়াসিমকে দিয়ে বহির্বিভাগ পরিচালনা করা হচ্ছে। এখানে প্রতিদিন ৫-৬ শিশু রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসে বলে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা জানান।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন রাশিদা সুলতানা বলেন, আমি আসার আগের সির্ভিল সার্জনরা বেশ কয়েকবার হাসপাতালটি চালু করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগে চিঠি দিয়েছিল। এখানে চিকিৎসক, স্টাফ নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে হাসপাতালটি পূর্ণরূপে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাগজপত্র অনুমোদন দিলেই সব কার্যক্রম শুরু করা হবে।