দীর্ঘ হচ্ছে বিভিন্ন উপজেলার নিখোঁজদের তালিকা
1 min readঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নিখোঁজের তালিকা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের হারিয়ে অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ পর্যন্ত অন্তত সাতজন নিখোঁজ হয়েছেন।
শৈলকূপা থানা সূত্রে জানা যায়, শৈলকুপার শেখড়া গ্রামের আলামিনের স্ত্রী লাকি বেগম (৪০) গত ২৪ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। গত ৩ এপ্রিল তারা শৈলকুপা থানায় একটি জিডি করেন বলে জানান লাকি বেগমের স্বামী আলামিন। লাকি বেগমকে গত ২৩ মার্চ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না।
পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার কামতা গ্রামের আবু তাহেরের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে হাসিবুর রহমান সাগর (১৩) ও একই গ্রামের মোস্তফার ছেলে সবুজ হোসেন (১২) গত ১৩ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ রয়েছে।
নিখোঁজ হাসিবুর রহমান সাগরের মা নাসিমা বেগম বলেন, সকালে তার ছেলেকে স্কুলে যাওয়ার কথা বলে পাশের বাড়ির সবুজের সঙ্গে কোথায় যেন চলে যায়। এরপর থেকে দুইজন নিখোঁজ রয়েছে।
নিখোঁজ সাগরের ভাই সাইফুল ইসলাম জানান, খোঁজাখুঁজি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তারা এ বিষয়ে এখনো কোনো জিডি করেননি। আজ কালের মধ্যে জিডি করবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে, গত ২৪ দিনের ব্যবধানে ঝিনাইদহে সাদাপোশাকে পুলিশ পরিচয়ে ৫ ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছে তাদের পরিবার। কিন্তু এই ব্যাপারে কোনো অভিযোগ নেয়নি তাদের পরিবার। এর মধ্যে কোটচাঁদপুর উপজেলা থেকে তিনজন ও সদর উপজেলা থেকে দুজনকে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ মার্চ কোটচাঁদপুরের জালালপুর গ্রামের ইমরুল হোসেন, সদর উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের ইব্রাহিম গাজি ও রেজাউল ইসলামকে পুলিশ পরিচয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এছাড়া কোটচাঁদপুরের বলাবাড়িয়া গ্রামের আলম খানকে গত মসের শেষ মঙ্গলবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। আর কোটচাঁদপুর পৌর কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ন কবিরকে বুধবার দুপুরে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিখোঁজ ইমরুল হোসেনের স্ত্রী চম্পা খাতুন বলেন, গত ২২ মার্চ রাত ১২টার পর পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন বাড়ির দরজা খুলতে বলেন। দরজা খোলার পর ইমরুলকে বের করে গাড়িতে তোলা হয়। কী কারণে তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, জানতে চাইলে ওই ব্যক্তিরা বলেন, এক আসামির বাড়ি চেনার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপর থেকে তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। কোটচাঁদপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে পুলিশ নেয়নি বলেও জানান তিনি।
নিখোঁজ আলম খানের ছেলে জুবায়ের খান সাংবাদিকদের বলেন, তার বাবাকে মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ পরিচয় দেয়া ৮-১০ জন।
কোটচাঁদপুর পৌর কলেজের দফতরি শাহজাহান আলী জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি সাদা মাইক্রোবাস এসে থামে তাদের কলেজের পাশে। এরপর অধ্যক্ষ হুমায়ন কবিরকে ডাক দেন সাদাপোশাকধারীরা। মাইক্রোবাসের কাছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঝিনাইদহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ বলেন, এ ধরনের খবর তারাও শুনেছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে কাউকে তুলে আনার কথাটি ঠিক নয়। তারাও নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজ করছেন।