ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে কালের সাক্ষী সতশ বছরের মসজিদগুলো
1 min readমসজিদগুলো সরকারে নিছে ঠিকই কিন্তুু এগুলোর যথাযত তদারকি হয় না। দিনের পর দিন ইতিহাস হারিয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে কষ্টের কথা নতুন প্রজন্ম জানার আগেই দেশের এই সম্পদ বিলীন হয়ে যাচ্ছে” এমনই অভিযোগ করলেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে যেয়ে জানা যায়, বারো আউলিয়ার বারোবাজার ঝিনাইদহ শহর থেকে ৩২ কিলোমিটার দক্ষিণে আর যশোর জেলা থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। বারো জন আউলিয়ার নামানুসারে এর নামকরণ হয়েছে বারোবাজার। ঐতিহাসিক এসব মসজিদের কারণে এ এলাকাকে বলা হয়, মসজিদের পল্লী।
আরও জানা যায়, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ১৯৯৩ সালে মাটি খুঁড়তেই প্রায় ৭০০ বছরের প্রাচীন নিদর্শনের সন্ধান মেলে। সন্ধান মেলে বেশকিছু মসজিদ আর মাটিতে চাপা পড়া ইতিহাসের। কিন্তু প্রথমদিকে মসজিদগুলো সংরক্ষণে কাজের গতি থাকলেও এখন তা একেবারেই নেই। তাই এখানে গড়ে ওঠেনি কোনো পর্যটন কেন্দ্র। এমনকি পড়ে থাকতে তাকতে আবারও সেই ধাবংসের পথেই এগুচ্ছে কালের সাক্ষী এই মসজিদগুলো।
এলাকাবাসী জানায়, আউলিয়ারা হলেন এনায়েত খাঁ, আবদাল খাঁ, দৌলত খাঁ, রহমত খাঁ, শমসের খাঁ, মুরাদ খাঁ, হৈবত খাঁ, নিয়ামত খাঁ, সৈয়ধ খাঁ, বেলায়েত খাঁ ও শাহাদত খাঁ। এসব আউলিয়ার নামে শুধু বারোবাজার নয় পার্শ্ববর্তী অনেক গ্রামের নামও রাখা হয়েছে। এই মসজিদ গুলো ঠিক কত আগে নির্মিত তা স্থানীয় লোকজন কেউই ঠিক মত বলতে পারেন না। মসজিদ গুলো একসময় মাটিরনীচে ছিল, অর্থাৎ এগুলো ছিল মাটির ঢিপি । এই সমস্ত ঢিবিতে বুনো গাছপালা বাশ-ঝাড় ও জঙ্গল ইত্যাদি ছিল।
স্থানীয় লোকজন মাটি কাটার ফলে আস্তে-আস্তে জানাজানি হয় যে এর নীচে ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। এরপর প্রতœতত্ব অধিদপ্তর এর খননকাজ চালিয়ে এবং পুনরায় সংস্কারের মাধ্যমে বর্তমানের এই চেহারায় ফিরিয়ে আনে। এই মসজিদ গুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট আছে তা হচ্ছে প্রতিটি মসজিদের সাথেই আছে একটি বড় পুকুর এবং মসজিদ থেকে সিড়ি বের হয়ে পুকুরে গিয়ে মিশেছে। বারোবাজার অঞ্চলে এখনও ৮৪ একর পুকুর ও দিঘি বিদ্যমান রয়েছে।
এরকম ছোট-বড় অর্থাৎ এক গম্বুজ বিশিষ্ট, চার গম্বুজ ও ছয় গম্বুজ বিশিষ্ট মোট ১২ টি মসজিদ এখানে রয়েছে। মসজিদ গুলির কোন ইতিহাস, বা খনন কাজের সময় প্রাপ্ত ঐতিহাসিক কোন নিদর্শন এখানে সংরক্ষনের কোন ব্যবস্থা প্রতœতত্ব অধিদপ্তর করেনি। শুধু মসজিদ গুলির সামনে একটি ছোট সাইনবোর্ড টানিয়ে তাদের দাযত্বি শেষ করেছে।
এখানে ঘুরতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থী জানান, বারবাজারের ঐতিহ্যবাহী এসব মসজিদ মাটি সরিয়ে আবিষ্কার করা হলেও তার ইতিহাস কিন্তু ‘মাটিচাপা’ পড়েই থাকছে। ঝিনাইদহবাসী মনে করে বারোবাজারসহ আরো অনেক নির্দেশন রয়েছে যেগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে পারে পর্যটন কেন্দ্র। তাদের প্রত্যাশা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাববে।
কালীগঞ্জের বদলী হওয়া ইউএনও মানোয়ার হোসেন মোল্ল্যা জানান, ইতিমধ্যে প্রতœতত্ত্ব বিভাগ মসজিদগুলোকে সংস্কারের কাজ করেছে। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে এই বারোবাজারে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। এটি করা হলে দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়বে বারোবাজারের নাম।