ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি: ৩৭ বাংলাদেশির মৃত্যুর আশঙ্কা
1 min readঝিনাইদহ নিউজ ডেস্ক: ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে বহু মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ৫১ জন বাংলাদেশিসহ ৭৫ জন অভিবাসী বহনকারী নৌকাটি ডুবে যায়।
ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর ১৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ১৬ জনের মধ্যে ১৪ জনই বাংলাদেশি। তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ার উপকূলে এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের শনিবার সকালে তিউনিসিয়ার জারযিজ শহরের তীরে আনা হয়।
ত্রিপলিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ সিকান্দার আলী জানান, তারা দুর্ঘটনার কথা শুনেছেন এবং তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব তারা জারযিজে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সড়কপথে তিউনিসিয়া যাওয়া সম্ভব নয় বলে তাদের আকাশপথে যেতে হবে।
বেঁচে ফেরা অভিবাসীরা জানান, নৌকাটিতে ৫১ জন বাংলাদেশি ছিলেন। এছাড়া মিসর, মরক্কো, শাদসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশের নাগরিক ছিলেন।
তারা আরও জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ৭৫ জন অভিবাসী নিয়ে একটি বড় নৌকা লিবিয়ার উপকূল থেকে ইতালির উদ্দেশে রওনা হয়। এরপর গভীর সাগরে নৌকাটি থেকে অপেক্ষাকৃত ছোট একটি নৌকায় যাত্রীদের তোলা হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটি ডুবে যায়।
তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা মঙ্গি স্লিম জানান, রাবারের তৈরি ‘ইনফ্লেটেবেল’ নৌকাটি ১০ মিনিটের মধ্যে ডুবে যায়। তিউনিসিয়ার জেলেরা ১৬ জনকে উদ্ধার করে জারযিজ শহরের তীরে নিয়ে আসেন।
জারযিজের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে অভিবাসীদের রাখা হয়েছে। তাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা জানান, ঠাণ্ডা সাগরের পানিতে তারা প্রায় আট ঘণ্টা ভেসে ছিলেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) কর্মকর্তারা জানান, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের পক্ষ থেকে এ দুর্ঘটনায় ৬৫ জনের প্রাণহানির খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। ১৬ জনকে জীবিত উদ্ধারের কথাও তারা জানান। তিউনিসিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা টিএপির খবর অনুযায়ী ডুবে যাওয়া নৌকায় ৭০ জনেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন। সি ফ্যাক্স উপকূলের ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে এটি ডুবে যায়। তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিস থেকে ওই স্থানের দূরত্ব প্রায় ২৭০ কিলোমিটার।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, মর্মান্তিক ওই নৌকাডুবির পর অভিবাসীদের উদ্ধারে একটি মাছ ধরার নৌযান নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তিউনিস নৌবাহিনী। তারা জীবিতদের পাশাপাশি তিনজনের মরদেহ উদ্ধারে সমর্থ হয়।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম এ ঘটনাকে ভূমধ্যসাগরের ‘আরেকটি বিয়োগান্তক ঘটনা’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, জাহাজটি পাশের দেশ লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে ছেড়ে এসেছিল।
সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা জানান, ডুবে যাওয়া শরণার্থীদের মধ্যে লিবীয় ছাড়াও বাংলাদেশ ও মরক্কোর নাগরিকরা ছিলেন। তবে নৌকাটিতে ঠিক কতজন বাংলাদেশি বা কোন দেশের কতজন নাগরিক ছিলেন, তা জানা যায়নি। এ বছরের প্রথম চার মাসে লিবিয়া থেকে ইউরোপ পাড়ি দেয়ার সময় নৌকা ডুবে কমপক্ষে ১৬৪ জন মারা গেছেন বলে জাতিসংঘ বলছে।