মহেশপুর উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের ভেতরে স্থাপনা নির্মাণ
1 min readঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের ভেতরে স্থাপনা নির্মাণ করছেন এক ব্যবসায়ী। তাঁর দাবি, কেনা জমিতে এ পাকা ঘর নির্মিত হচ্ছে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, জায়গাটি নদের। সেখানে স্থাপনা নির্মাণ করা হলে নদের পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে।
কোটচাঁদপুর উপজেলা শহর-সংলগ্ন মহেশপুর উপজেলার ব্রিজঘাট এলাকায় এ স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, মহেশপুরের আজমপুর ইউনিয়নের সীমানা ঘেঁষে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। নদের অপর প্রান্তে রয়েছে কোটচাঁদপুর শহর। ব্রিজঘাট নামের এ স্থানে একটি সেতু রয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, সেতুর দক্ষিণে মহেশপুর সীমান্তে প্রায় ১০ মাস আগে একটি ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন মাহবুবুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। দ্রুতগতিতে ভবনের কাজ চলছিল। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন নদের জায়গায় ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, দাবি তুলে এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। তখন নির্মাণকাজটি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি আবার সেই কাজ শুরু করেছেন মাহবুবুর।
ব্রিজঘাট এলাকার বাসিন্দা সুমন আহম্মদ বলেন, যেখানে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, বর্ষা মৌসুমে সেখানে পানি থাকে। ভবন নির্মাণ করা হলে কপোতাক্ষ নদের পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে।
এলাকাবাসী বলছেন, নদের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে তাঁরা বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। বরং সরকারি কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশেই নদের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে। ওই কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে নদের জায়গার কাগজপত্র তৈরি করে দিচ্ছেন। একটি চক্র সেই কাগজ দেখিয়ে ওই জমি বেচাকেনা করে আসছে।
অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান বলেন, জমিটি সিদ্দিকুর রহমান নামের এক ব্যক্তির নামে রেকর্ড করা আছে। তাঁর কাছ থেকে আট শতক জমি কিনেছেন তিনি। সেই জমিতে ভবন নির্মাণ করছেন; নদের জায়গায় নয়। মাহবুবুর আরও বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তদন্ত করে অনিয়মের কিছু পায়নি।
মামলাটি করেছিলেন স্থানীয় আজমপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা। পুলিশ তদন্ত করে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে।
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশফাকুর রহমান বলেন, পুলিশের তদন্তের কারণে মামলাটি নথিজাত হয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসন এর বিরুদ্ধে আপিল করবে। তিনি বলেন, যে স্থানে ভবনটি হচ্ছে, সেটা যে নদের মধ্যে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ভবন নির্মাণে যুক্ত ব্যক্তিরা জমির কিছু কাগজপত্র দেখিয়েছেন। কাগজপত্র সঠিকও হতে পারে। ব্যক্তিমালিকানার জমি ভেঙে নদের মধ্যে চলে যেতে পারে। সেটা হলেও আইনানুযায়ী জমিটি এখন আর ব্যক্তিমালিকানাধীন নয়।