শৈলকুপার নির্বাচনে কবরস্থান বিতর্ক
1 min readশৈলকুপা পৌরসভা ভোটের মাঠে সবচে বেশি আলোচিত বিষয় পৌর কবরস্থান। কর্তৃপক্ষ গত ৫ বছরে কবরস্থান নির্মানের জন্য হিন্দু-মুসলমানের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেছেন। নাগরিক সুবিধা নিতে গেলেই দিতে হয়েছে এই চাঁদা। কিন্তু আজো কবরস্থান নির্মান হয়নি। এমনকি জায়গা নির্বাচনও নেই। যা সাধারণ ভোটারদের মাঝে ব্যপক আলোচিত হচ্ছে।
অবশ্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছেন উত্তোলনকৃত টাকা ব্যাংকে জমা রাখা আছে। কিন্তু কবরস্থান নির্মান করতে যে টাকার প্রয়াজন ৫ বছরেও সেই পরিমান টাকা জমা হয়নি। যে কারনে তারা নির্মান করতে পারেনি। আর প্রতিপক্ষ প্রার্থী এবং ভোটারদের অভিযোগ অদৃশ্য কবরস্থানের কথা বলে এভাবে টাকা আদায় করা ঠিক হয়নি। তাছাড়া প্রশ্ন এসেছে একটি কবরস্থান নির্মানের উদ্যোগ নিয়ে ৫ বছরেও যে কর্তৃপক্ষ সফল হতে পারেনি তারা আগামীতে কতটুকু সফলতা আনতে সক্ষম হবেন।
প্রসঙ্গত ঝিনাইদহ শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচনে এবার মেয়র পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এর মধ্যে স্বামী-স্ত্রী রয়েছেন। এরা হচ্ছেন বর্তমান মেয়র সরকার দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত কাজী আশরাফুল আজম, সাবেক মেয়র বিএনপি মনোনিত খলিলুর রহমান, তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা, সতন্ত্র প্রার্থী ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল ইসলাম ওরফে রাজু ও মনোনয়ন বঞ্চিত পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সম্পাদক তৈয়বুর রহমান খাঁন।
সরেজমিনে পৌরসভা এলাকার ভোটারদের সঙ্গে কথা বললে এক শ্রেণীর ভোটার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কবরস্থান নির্মান নিয়ে। সাধারণ ভোটাররা অভিযোগ করেন, শৈলকুপা পৌরসভা এলাকায় পৌর কবরস্থান নির্মান হবে শুনে তারা খুশি হয়েছিলেন। বর্তমান মেয়র কাজী আশরাফুল আজম নির্বাচিত হবার পর তিনি কবরস্থান নির্মানের প্রতিশ্রুতি দেন। আর এই কবরস্থান নির্মানের কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় শুরু করেন। সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা পেতে পৌরসভায় গেলে দিতে হয়েছে কবরস্থানের চাঁদা। হিন্দু-মুসলিম সব সম্প্রদায়ের কাছ থেকেই নেওয়া হচ্ছে এই চাঁদা। গত ৫ টি বছর ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারেশ কায়েম সনদসহ সকল নাগরিক সুবিধা পেতে পৌর এলাকার নাগরিকদের দিতে হয়েছে এই টাকা। তারাও প্রথম দিকে খুশি হয়ে টাকা দিয়েছেন। কিন্তু বছরের পর বছর কবরস্থান নির্মান না করে টাকা নেওয়ার টাকা দেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এখন টাকা চাইলে তাদের কষ্ট হয়।
আনিচুর রহমান নামের এক ভোটার জানান, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ টাকা আদায় করতে গিয়ে ভিন্ন ধর্মের মানুষের কাছ থেকেও নিয়েছেন। ভিন্ন ধর্মের মানুষ এই টাকা দিতে চাননি, কিন্তু নাগরিক সুবিধা পেতে টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন। যে কোনো কাজে গেলেই দিতে হয়েছে কবরস্থানের ৫০ টাকা।
শহরের থানা রোডের কার্ত্তিক ট্রেডার্স এর মালিক কার্ত্তিক সাহা জানান, কবরস্থানের টাকা দেওয়ার সময় তারা আপত্তি করেছিলেন, কিন্তু কাজ হয়নি। তিনি ২০১৪ সালের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স করতে গিয়েছিলেন। এই কাজে ট্রেড লাইসেন্স বাবদ তাকে ২০০ টাকা জমা দিতে হয়েছে। আর কবরস্থানের জন্য দিতে হয়েছে ৫০ টাকা। তিনি বলেন, এই টাকা দেওয়ার সময় দাবি করেছিলেন শ্বশান প্রতিষ্ঠার চিন্তা করা হোক। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেটা মানেনি।
শহরের গিরিধারী জুয়েলার্স এর মালিক ঝন্টু জোয়ার্দ্দার জানালেন তিনিও কবরস্থানের টাকা দিয়েছেন। এটা তাদের জন্য কষ্টকর।
এ ব্যাপারে বর্তমান মেয়র কাজী আশরাফুল আজম এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, কবরস্থান নির্মানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে পরিমান টাকার প্রয়োজন সেই পরিমান টাকার জোগাড় করতে না পেরে নির্মান করা সম্ভব হয়নি। তবে আগামীতে করা হবে বলে জানান। তিনি বলেন, এই টাকা কারো কাছ থেকে জোর করে নেওয়া হয়নি। নাগরিকরা খুশি হয়ে দিয়েছেন। হিন্দু-মুসলিম সকলের কাছ থেকে নেওয়া প্রসঙ্গে বলেন তারা খুশি হয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই টাকা ব্যাংকে জমা আছে। কত টাকা জমা আছে জানতে চাইলে এই মুহুর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান।
বাংলাদেশ রসাতলে গেল।
http://jolirabbani.com/