Mon. Dec 23rd, 2024

ঝিনাইদহ নিউজ

সবার আগে সর্বশেষ

৮০ দশকের পর মধুহাটি ইউনিয়নের অধিকাংশ হত্যার আসামিদের দণ্ড হয়নি

1 min read

নিহত মিম।
নিহত মিম।

সামাজিক দ্বন্দ, চরমপন্থি দলের আধিপত্য বিস্তার, চাঁদার টাকা ভাগাভাগি এবং এক শ্রেণী শত্রু খতমের নামে ৮০ দশকের পর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ২নং মধুহাটি ইউনিয়নের ২২টি গ্রামে ৮৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। যার অধিকাংশেরই মামলা হয়নি।

গ্রামবাসি ও পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মামলা হলেও স্বাক্ষীগনের নিরাপত্তার কারনে হাজিরা দেয়নি। আবার কোন কোন মামলা বিবাদিদের চাপে গ্রাম্য শালিশে আপোশরফা করতে বাধ্য হয়েছে। ফলে মামলা নিষ্পত্তি বা কোন আসামির দণ্ড হয়নি।

খোঁজনিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়নের বাজার গোপালপুর গ্রামের নরেন্দ্র দত্ত কে প্রথম দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। আর সর্বশেষ হত্যা কান্ডের শিকার হন ওয়াড়িয়া গ্রামের স্কুল ছাত্রী মিম খাতুন। মিম হত্যা কান্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। কিন্তু লাশ গ্রহনের নামে স্থানীয় মেম্বর কৌশলে কাগজে স্বাক্ষর, কয়েক মাস না যেতেই আসামিদের আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন, এমনকি হত্যা মামলার কোন আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় মামলার ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে নিহতের পরিবারের লোকজন দাবি করেন।

নিহতের পিতা ইকবাল হোসেন জানান, গত বছর ৩০ অক্টোবর সন্ধায় তার মেয়ে মিম প্রতিবেশী হুজুর আলীর বাড়িতে মিলাদ শুনতে বাড়ি থেকে বের হয়। মিলাদ শেষে বাড়িতে ফিরে না আসলে খোঁজাখুজি কারেও পাওয়া যাইনি। পরদিন ৩১ অক্টোবর দুপুরে গ্রামের চিত্রা নদীর পাড়ে একটি মেহগনি বাগানে মীমের মরদেহ পাওয়া যায়। খবর দেয়া হয় পুলিশেকে। বাজার গোপালপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস,আই মতলেবুর রহমান ফোর্স নিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ঝিনাইদহ মর্গে প্রেরন করে।

তিনি আভিযোগ করে আরো জানান, ১লা নভেম্বর লাশ বাড়িতে নেওয়ার সময় গ্রামের মেম্বর আলতাফ হোসেন লাশ গ্রহনের নামে টাইপকৃত একটি কাগজে টিপসহি নেয় হয়। পরে থানায় খোঁজনিয়ে জানতে পারি একজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলার নকল কপি তুলে দেখতে পাই রাজু নামের একজনকে আসামি করা হয়েছে। যার নং ০১। তারিখ-০১/১১/১৫ ইং। তবে তিনি থানায় এই মামলা করেনি বলে জানান। হত্যা কান্ডটি পরিকল্পিত ভাবে ধামা চাপা বা অন্যদিকে নেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বিষয়টি তিনি বুঝতে পেরে মীমের মা বিলকিচ খাতুন বাদি করে মেয়ে হত্যা কান্ডের ঘটনায় গত ১৩ই ডিসেম্বর /১৫ ইং গ্রামের আবুল মন্ডলের ছেলে মোঃ আলতাফ হোসেন মেম্বর (৪৭) মোঃ মুক্তার বিশ্বাস ছেলে মোঃ রাজু (২৫), মোঃ খেদের আলী ছেলে মোঃ ইজাজুল (২০), মোঃ খাইরুল ইসলামের ছেলে মোঃ বিল্লাল (২০), মোঃ আতিয়ার রহমানের ছেলে মোঃ নাগর আলী (২৫), আবুল মন্ডলের ছেলে মোঃ খাইরুল ইসলাম (৪৫)ও এর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনকে আসামী করে ঝিনাইদহ বিজ্ঞ আমলী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং ৭২৭/১৫। কিন্ত দীর্ঘ সময়েও হত্যা কান্ডের ক্লু উদ্ধার, হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত আসামি, এমনকি দায়েরকৃত মামলার কোন আসামীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে মামলার আসামীরা বাদী পক্ষকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রকাশ্যে দিবালোকে নান ভাবে ভয়-ভীতি ও জীবন নাশের হুমকি প্রদান করছে। এই ঘটনায় মামলার বাদি পক্ষ চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে।

কাগজে কি লেখা হয়ে ছিল এবিষয়ে জানার জন্য মেম্বর আলতাফ হোসেনর নিকট যোগাযোগ করে পাওয়া যাইনি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ০১৭২১-০৬২২৭৮ নম্বরে যোগাযোগ করেও বন্ধ থাকায় জানা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফারুক হোসেন জানান, মামলাটি তদন্তের জন্য আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। হত্যার প্রকৃত ঘটনা উদ্ধার এবং আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *