ভ্যান চুরির অপবাদে কিশোরকে পিটিয়ে আহত
1 min readঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলায় ভ্যান চুরির অপবাদ দিয়ে দরিদ্র এক কিশোরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। সে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আর্থিক সংকটের কারণে ঠিকমতো ওষুধ কিনতে পারছে না তার পরিবার।
ওই কিশোরের নাম সুমন দাস (১৭)। সে ফুলবাড়ী গ্রামের ঝড়ু দাসের ছেলে। সে মহাজনের কাছ থেকে জুতা কিনে ভ্যানে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করত। বাবা ঝড়ু দাস বাঁশের ঝুড়ি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুমন দাস বলে, ২১ আগস্ট তাদের গ্রামের মিজানুর রহমান ফোন করে তাকে বাড়ির বাইরে আসতে বলেন। বাইরে আসামাত্র একই গ্রামের কালু মিয়া তাকে মারধর শুরু করেন। ওই দুজন বলতে থাকেন কালু মিয়ার ভ্যান চুরি হয়েছে, সুমন সেটা চুরি করেছে। সে চুরি করেনি বলে ওই দুজনের হাতে-পায়ে ধরলেও তাকে ছাড়া হয়নি। পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রাখা হয়। পরে দু-তিনজন এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তার ডান পায়ে মারাত্মক যন্ত্রণা। চিকিৎসকেরা এক্স-রে করাতে বলেছেন, কিন্তু টাকার অভাবে করানো যাচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ওয়াদুদুর রহমান জানান, সুমন যখন হাসপাতালে আসে, তখন অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এখন অনেকটা ভালো। তবে ডান পা এক্স-রে করার পর বোঝা যাবে পায়ে কোনো সমস্যা আছে কি না।
সুমনের বাবা ঝড়ু দাস জানান, অর্থ না থাকায় তিনি ঠিকমতো ওষুধ কিনতে পারছেন না। ঘটনার পর তিনি থানায় অভিযোগ করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু নানাভাবে ভয় দেখানোয় তিনি মামলা করতে পারছেন না। এ কারণে তিনি গ্রামের লোকজনের কাছে বিচার চেয়েছেন। সেখানেও বিচার পাচ্ছেন না।
ফুলবাড়ী গ্রামের কালু মিয়া বলেন, তাঁর ভ্যানটি হারিয়ে যাওয়ার পর শুনতে পারেন এটা সুমনদের কাজ। সুমন চুরির কথা স্বীকার না করলেও তার অন্য বন্ধুরা স্বীকার করেছে। এরপরও তিনি সুমনের গায়ে হাত তোলেননি। প্রতিবেশী কয়েকজন যুবক সামান্য মারধর করেছে। এতে গুরুতর আহত হওয়ার কথা নয়।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রবিউল ইসলাম বলেন, তাঁরা ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করছেন। কিন্তু যাঁরা সুমনকে মারধর করেছেন, তাঁরা আসছেন না। তাঁরা না এলে বিষয়টি আইনের মাধ্যমে যা হয় তাই হবে।