আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসে দুর্নীতিমুক্ত ও দেশপ্রেমিক ছাত্রসমাজ গড়ে তোলার আহ্বান
1 min read৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক), ঝিনাইদহ এর যৌথ উদ্যোগে র্যালি, মানববন্ধন, দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন প্রদর্শন ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানসমূহে অংশগ্রহণ করেন সনাক, দুপ্রক, স্বজন, ইয়েস, সততা সংঘ, ইয়েস ফ্রেন্ডস সদস্য, পুলিশ, সরকারি কেসি কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক, বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পোস্ট অফিস মোড়ে মানববন্ধনে সমবেত হয়।
মানববন্ধনে দুর্নীতিবিরোধী ব্যানার, প্লাকার্ড, পোস্টার ও কার্টুন ব্যবহার করা হয়। মানববন্ধনে মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার এস.এম. শাহাবুদ্দিন আহমেদ। মানববন্ধন শেষে সরকারি কেসি কলেজে আলোচনা সভা ও দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন প্রদর্শন করা হয়।
‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে একসাথে’ শ্লোগানকে সামনে রেখে ৮ ডিসেম্বর আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সরকারি কেসি কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিএম রেজাউল করিম। মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন সনাক সভাপতি মো: আবু তাহের, দুপ্রক সভাপতি মো: আব্দুল মতিন, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর সুনীল চন্দ্র দাস, সনাক সদস্য প্রফেসর মো: মহব্বত হোসেন, কেসি কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আসাদ-উজ-জামান, সনাক সদস্য ও দুপ্রক সাধারণ সম্পাদক এন এম শাহজালাল ও কলেজ ছাত্রী ইয়েস দলনেতা জিনিয়া জাফরিন উর্মী প্রমূখ। প্রফেসর ড. বিএম রেজাউল করিম বলেন, পৃথিবীতে দুই শ্রেণির মানুষ আছে।
শোষক শ্রেণি ও শোষিত শ্রেণি। শোষক শ্রেণির শোষণ ও দুর্নীতি এখনও প্রতিরোধ করতে পারেনি। শুধুমাত্র রাজনীতিবিদগণই দুর্নীতি করে না, সকল শ্রেণির মানুষ দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকে। দুর্নীতি প্রতিরোধে অত্যন্ত ঝুকি থাকবেই। তারপরও প্রতিরোধে ঝুকি নিতে হবে। দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন নিরপেক্ষভাবে করতে হবে।
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন রাজনীতির মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে জীবনকে। কারণ রাজনীতির মাধ্যমেই দেশ স্বাধীন হয়েছে, রাজনীতিই পারে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে। দেশ স্বাধীন করতে যেভাবে ছাত্র রাজনীতি ভূমিকা রেখেছে, ঠিক তেমনি দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতি করতে হবে। তাই তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের দুর্নীতিমুক্ত ও দেশপ্রেমিক ছাত্রসমাজ হিসেবে গড়ে ওঠার আহ্বান জানান।
অন্যান্য বক্তাগণ বলেন, মানুষ ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে যাচ্ছে। ঘুষ দিয়ে চাকরী শুরু করে, সেই টাকা তুলতেই দুর্নীতির সুত্রপাত হয়। প্রশ্ন ফাঁস ও নকল প্রবনতাও দুর্নীতি। প্রত্যেক মানুষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে দুর্নীতি বন্ধ করলেই দুর্নীতি কমে যাবে। সুষ্ঠু রাজনীতি যদি না আসে, সঠিক ব্যক্তি যদি রাজনীতিতে না যায়, তাহলে দুর্নীতি প্রতিরোধ কঠিন হবে। দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই।
সনাক সভাপতি বলেন জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী সনদের ১৩ অনুচ্ছেদে দুর্নীতি প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সকলকে একত্রিত করে দুর্নীতি প্রতিরোধের আহ্বান রয়েছে। দুর্নীতি প্রতিরোধ তাই কারোর একক এজেন্ডা নয়, বরং সকলের সম্মিলিত প্রয়াসেই দুর্নীতির করাল গ্রাস থেকে দেশকে মুক্ত করা সম্ভব। দুর্নীতির চিত্র ও স্বরূপ উন্মোচনে প্রত্যেকেই প্রত্যয়দীপ্ত ভূমিকা পালন করলে দুর্নীতিবাজরা যেমন লুকিয়ে থাকতে পারবে না, তেমনি তাদের আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত ও কার্যকর করার মাধ্যমেই বাংলাদেশে কার্যকরভাবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।