সদ্য সরকারী হওয়া ৭৩ প্রাইমারি স্কুল থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
1 min readস্টাফ রিপোর্টারঃ ঢাকায় জাতীয়করণ দিবসে যোগ দেওয়ার কথা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সদ্য সরকারী হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ৯ জানুয়ারী ঢাকায় জাতীয়করণ দিবস পালিত হয়েছে। আর সে অনুষ্ঠানের যোগ দেওয়ার খরচ বাবদ উপজেলা ৭৩ স্কুল থেকে ১৬শ টাকা করে বড় অঙ্কের এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান।
এমন অভিযোগ পাওয়ার পর টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক ও ১নং সুন্দরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ রতন স্বীকার করে নেন। কিন্তু সংগঠনের সভাপতি ও মাসলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি আরো জানান, আমরা ঢাকায় তিনটি গাড়ি নিয়ে ১১০ জন শিক্ষক ঢাকার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম।
টাকা হাতিয়ে নেওয়ার এ বিষয় নিয়ে কথা বলা হয় প্রায় ২০ টি স্কুলের শিক্ষকদের সাথে। তাদের প্রায় সবাই টাকা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাদের স্কুল থেকে কোন শিক্ষক ঢাকার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যায়নি। হাতে গোনা কয়েকজন বলেন তাদের স্কুল থেকে একজন অথবা দু’জন শিক্ষক ঢাকায় গেছে।
জটারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা হোসেন জানান, আমার কাছে ১৬শ টাকা চেয়েছিল। পরে আমি শিক্ষক নেতা মিজানুর রহমানের কাছে ১৫ টাকা দিয়েছিলাম।
মহেশ্বরচাদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াসমিন আরা জানান, শিক্ষক নেতা সবুর খান আমার স্কুলে এসে ঢাকায় যাওয়ার নাম করে ১৫শ টাকা নিয়ে গেছে। পরে আরো একশ টাকা আরো দিতে হবে।
বেথুলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিষ্ণু পদ জানান, আমার স্কুল থেকে একজন গেছে। তবে শিক্ষক মিজানুর এসে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে ১৬শ টাকা নিয়ে গেছে।
বহিরগাছি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান জানান, আমার স্কুলের দু’জন শিক্ষক ঢাকায় গিয়েছিল। ১৬শ টাকা জমা দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেন।
কাকলাশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাসেল আহমেদ জানান, আমার স্কুল থেকে ১৬ টাকা দেওয়া হয়েছে এবং প্রধান শিক্ষক গেছে।
পাতবিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ১৬ টাকা চাঁদা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। এছাড়া টাকা নেওয়ার কথা জানান, রামচন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শমশের আলী। তাদের স্কুল থেকে কোন শিক্ষক ঢাকায় যায়নি বলেও জানান তারা।
১নং সুন্দরপুর সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও উপজেলা প্রথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ রতন জানান, সংগঠনের সভাপতি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে স্কুল প্রতি ১৬শ টাকা করে আদায় করে। যে কারণে আমি তাদের সাথে ঢাকা না যে জেলার সব স্কুলের শিক্ষক ঝিনাইদহে অনুষ্ঠান করেছি। তিনি আরো জানান তারা বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীদি দেখিয়ে বেতনের দিন ব্যাংকে গিয়ে জোর করে টাকা আদায় করে। কিন্তু প্রচার করে কালীগঞ্জ থেকে তিনটি বাস ভর্তি শিক্ষক নিয়ে ঢাকায় গেছে। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে তারা প্রায় এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সালমা খাতুন জানান, প্রতি স্কুল থেকে ১৬শ টাকা আদায়ের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, আমি বলেছিলাম কোন স্কুল থেকে যেতে চাইলে একজন করে নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে যেতে পারবে।
তারেক মাহমুদ,
কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ।