ঝিনাইদহে তামাক চাষ কমিয়ে দিচ্ছেন কৃষকরা
1 min readশারীরিক সমস্যার কারণে উল্লেখযোগ্যভাবে তামাক চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে ঝিনাইদহের তামাক চাষীরা। ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ছয় উপজেলায় ২০১৩-২০১৪ সালে ১৩৭০ হেক্টর, ২০১৪-২০১৫ সালে ৯২৫ হেক্টর তামাক চাষ হয়েছে ঝিনাইদহের ছয়টি উপজেলায়। কিন্তু, ২০১৫-২০১৬ সালে পাঁচটি উপজেলায় ৭৯৫ হেক্টর ও ২০১৬-২০১৭ সালে ৬৬০ হেক্টর তামাক চাষ হয়েছে ঝিনাইদহে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর, কালীগঞ্জ উপজেলায় ২৫, হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ১৫০, শৈলকুপা উপজেলায় ৯৫ ও মহেশপুর উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। শুধুমাত্র কোটচাঁদপুর উপজেলায় ২০১৫-২০১৬ ও ২০১৬-২০১৭ সালে তামাক চাষ হয়নি।
সদর উপজেলার তামাক চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তামাক চাষ শরীরের জন্য ক্ষতিকর হলেও এ চাষে বেশ লাভ হয়। তারা অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি দাম পায়। তামাক চাষে একসঙ্গে টাকা পাওয়ায় কাজে লাগানো যায়। সদর উপজেলার হীরাডাঙ্গা গ্রামের তামাক চাষী কওসার আলী জানান, ঢাকা টোব্যাকো কোম্পানি তামাক চাষে তাকে সাহায্য করে। তিনি ৩ বছর ধরে তামাক চাষ করছেন। এ বছর তিনি দেড় লাখ টাকা খরচ করে ৩ বিঘা জমিতে তামাক চাষ করেছেন। তিনি জানান, কোম্পানি তাদেরকে সার, চাষের পরামর্শ ও ভালো দামের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। এই বছরে ১৫০ টাকা কেজিতে তামাক বিক্রি করবেন। তিনি আশা করেন, এ বছর প্রায় ১ লাখ ২০ টাকা লাভ করবেন তিনি। হীরাডাঙ্গা গ্রামের আরেক কৃষক বাদশা মিয়া জানান, তার ছেলে সুজন হোসেন কে সি কলেজে এইচএসসি ১ম বর্ষে পড়ে। তার ছেলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর তামাক চাষ করতে নিষেধ করেছে। কিন্তু তামাকের ভালো দামের জন্য তিনি চাষ করেছেন। তিনি আরো জানান, তামাক চাষ স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। কালীগঞ্জ উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের সমসের আলী বলেন, আমি তামাকের বিড়ি ব্যবহার করি। কিছু বছর আমি শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় শরীরে। গত দুই বছরে আমি দুইবার স্ট্রোক করেছি। এখন ধুমপান বন্ধ করায় বেশ ভালো আছি। আর কখনও তিনি ধুমপান করবেন না বলে জানান। বেসরকারি সংস্থা প্রাপ্য’র পরিচালক সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জানান, তারা তামাকের ক্ষতিকর দিকগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে তামাকবিরোধী প্রচারণা, সভা ও র্যালি করে এটা চাষ বন্ধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ জেলায় তামাক চাষ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাচ্ছে। আর ১-২ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি অফিসের উপ-পরিচালক শাহ আকরামুল হক জানান, সরকার, এনজিও এবং বিভিন্ন সংস্থার আপ্রাণ চেষ্টায় ক্ষতিকর তামাক চাষ কমতে শুরু করেছে।”