মুক্তিযুদ্ধকালীন গণকবরের সন্ধান
1 min readঝিনাইদহে নতুন একটি মুক্তিযুদ্ধকালিন গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নাদকুন্ডু গ্রামে এই গণকবর রয়েছে। গণকবরে একই পরিবারের পাঁচ ভাই বোনকে কবরস্থ করা হয়। ১৯৭১সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে যুদ্ধের শেষের দিকেই এই নির্মম হত্যা কান্ড ঘটে। পাকিস্তানি সেনা বাহীনির একটি সেলের আঘাতে সদর উপজেলার মাগুরাপাড়া গ্রামের একই পরিবারে ৫সদস্য নিহত হয়, আহত হয় আরও ৪ জন। আহতরা পরবর্তী সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে ধুকে ধুকে মৃত্যুবরণ করেন। শরীরে সেলের আঘাত নিয়ে বেঁচে আছেন তাদের পরিবারের এমন এক সদস্য শেখ শাজাহান। তিনি বলেন, আমার শরীরে এখনো সেলের প্রিন্টারের অনেক ক্ষত চিহ্ন আছে।
যুদ্ধের ৪৬ বছর পার হয়ে গেলেও কেউ খোঁজখবর নেননি তাদের। অযতœ আর অবহেলায় কবরের চিহ্ন পর্যন্ত বিলিন হতে বসেছে।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা এবং বয়স্ক মুরব্বিরা বলেছেন, পরিবারের কোন সদস্য উদ্যোগ না নেওয়াই অযতেœ পড়ে আছে কবরগুলো। স্থানীয় মুরব্বি সিরাজুল ইসলাম, আতিয়ার রহমান, অলিয়ার রহমান, দোলনা ও মুক্তিযোদ্ধা শরিফুলসহ আরও অনেকে বলেন, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সাধুহাটী এবং বাজারগোপালপুরে তৎকালিন অবস্থিত পাকিস্তানি ক্যাম্প থেকে মিত্র বাহিনির সাথে যুদ্ধ চলাকালিন সময়ে পাকিস্তানি বিমান থেকে একটি সেল এসে পড়ে মাগুরা পাড়ার শেখ এহেসান উল্লাহ বাড়ির মধ্যে। এই সেল বিদ্ধ হয়ে এহেসান উল্লার তিন ছেলে এবং দুই মেয়ের মৃত্যু হয়। ছেলেরা হলেন শেখ মতিন, শেখ আজগর, শেখ মনিব, আর মেয়ে শেখ সীমা ও শেখ রেখা ঘটনা স্থলে নিহত হন। তাদের কে গরুর গাড়িতে নিয়ে গিয়ে নাদকুন্ডু গ্রামের একটি গোরস্থানে কবর দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা আরও জানান, ঐসময়ে আরও অনেকে আহত ছিলেন তারা পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে ধুকে ধুকে মারা গেছে। তৎকালিন এই কবরের কেউ সন্ধান না করাই আস্তে আস্তে তা বিলিন হয়ে হয়ে গেছে। এমন কি এহসান উল্লার পরিবারের পক্ষ থেকেও কোথাও কোন খোঁজ খবর না করায় নতুন প্রজন্মের মন থেকে আস্তে আস্তে এই কবরের কথা মুছে যেতে বসেছে।
এ বিষয়ে সাগান্না ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আল মামুন বলেন, মুক্তিযুদ্ধে এই ইউনিয়নের অনেকেই মারা গেছেন, অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে গণকবরের বিষয়টি সম্পর্কে স্থানীয় মুরব্বিরা আরও বেশী বলতে পারবেন।