কালীগঞ্জে বাফার গোডাউনে প্রতি বস্তায় ২/৪ কেজি সার কম
1 min read
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাফার সার গোডাউন আসা ১৬ ট্রাকে ৩শ মেট্রিকটন ইউরিয়ার প্রতি বস্তায় ২ থেকে ৪ কেজি কম থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় সার ডিলাররা সার নিতে অপরগতা জানালে গোডাউন কর্তৃপক্ষ এই সার রিসিভ করেনি। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের নবাব এন্ড কোম্পানী এই সার সরবরাহ করে বলে জানা যায়।
ডিলারদের অভিযোগের সূত্র ধরে রোববার গোডাউনে যেয়ে দেখা যায় প্রায় ৫০টি সার বোঝায় ট্রাক দাড় করে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে ১৬টি ট্রাক নবাব এন্ড কোম্পানীর বলে বাফার কর্তৃপক্ষ জানায়। তবে সেখানে থাকা শ্রমিক ও ডিলারদের দাবি বেশির ভাগই গাড়িই অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান নবাব এন্ড কোম্পানীর। দীর্ঘদিন সারগুলো বন্দরের ঘাটে পড়ে থাকায় এর গুনগত মানও নষ্ট হয়ে গেছে বলে ডিলারদের অভিযোগ। এছাড়াও প্রতি বস্তায় ২/৪ কেজি কম রয়েছে বলে অনুমান করছে বাফার সার গোডাউন কর্তৃপক্ষ।
এর আগে এই গোডাউন থেকে ডিলারদের মাঝে নিম্নমানের ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ইউরিয়া সার সরবরাহের অভিযোগ উঠে। যার ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ ফারটিলাইজার এ্যসোসিয়েশন ঝিনাইদহ শাখার সভাপতি ও সার ডিরার আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর জানান, আমরা দেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ শনিবার গোডাউনে যেয়ে ইনচার্জকে অনুরোধ করেছি কম ওজনের সার রিসিভ না করার জন্য।
কালীগঞ্জ বাফার সার গোডাইনের প্রধান হিসাব রক্ষক (ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ) জামির হোসেন জানান, আমরা আজকেই জেনেছি যে প্রতি বস্তায় সার কম আছে। এই প্রেক্ষিতে প্রতি ট্রাক থেকে কয়েকটি বাস্তা নামিয়ে মেপে দেখা যায় প্রতি বস্তায় প্রায় ২/৪ কেজি সার কম আছে। তিনি আরো বলেন, ডিলারদের অভিযোগের পরই আমার অভিযুক্ত এই প্রতিষ্ঠানের সার লোড আনলোড বন্ধ রেখেছি।
বাফার সার গোডাউনের ডিপো ইনচার্জ মাসুদ রানা জানান, আমি ডিলারদের অভিযোগ পেয়েছে। ইতিমধ্যে ট্রাক ভর্তি সার আমরা আটকে রেখেছি। সার প্রেরক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে তারা প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি সার বাফারকে বুঝিয়ে দেবে তখনই আমরা এগুলো গ্রহন করবো।
এ বিষয়ে নবাব এন্ড কোম্পানীর অপারেশন অফিসার ওসমান আলীর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ তরা হলে তিনি জানান, বস্তায় সার কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, দীর্ঘদিন ধরে সারগুলো ঘাটে পড়ে ছিল। যার কারনে কিছু বস্তার সার আবহাওয়ার কারনে কমে যেতে পারে। তবে আমরা অভিযোগ পাবার পর বাফার সার গোডাউন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, প্রতিবস্তায় ৫০কেজি করে মেপে তাদের সার বুঝিয়ে দেব। দীর্ঘদিন সার খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় গুনগত মান নষ্ট হয়ে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গুনগত মান ঠিক আছে।
এদিকে ডিলাররা অভিযোগ করেন, নিয়মানুশারে সার বাইরে থেকে আসার পর গোডাউনে নামিয়ে তারপর তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের মধ্যে বিতরন করার কথা। কিন্তু নিয়মের তোযাক্কা না করে দির্ঘদিন ধরে এই বাফার গোডাউনের ইনচার্জের সহযোগীতায় একটি চক্র মোটা টাকার বিনিময়ে সার গোডাউনে না নামিয়ে সরাসরি বিভিন্ন ডিলারদের কাছে পৌছে দিয়ে থাকে। ফলে কমপক্ষে ১০ বছর আগে গোডাউনে থাকা এসব সার এখনো পড়ে রয়েছে। যা ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে গেছে। এছাড়া ওজনে কম ও পুরাতন এসব জমাটবাঁধা মেয়াদ উত্তীর্ণ সার নতুন বস্তায় ভরে সরবরাহ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। বাফার গোডাউন সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় এ গোডাউন থেকে ২১৫ জন তালিকাভুক্ত ডিলারের মাঝে সার সরবারাহ করা হয়।