কালীগঞ্জে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ নেতা প্রধান শিক্ষককে পেটালেন !
1 min read
এবার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার হাট বারোবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে পিটিয়ে আহত করেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজ। একুশে ফেব্রয়ারির দিন সকালে শহীদ মিনার থেকে ফুল সরানোর অজুহাতে প্রধান শিক্ষককে মারধর করা হয়। এ সময় বারোবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ প্রধান শিক্ষককে লোকজনের সামনে বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজ করেন। লোকলজ্জা ও ভয়ে প্রধান শিক্ষক থানায় অভিযোগ করতে সাহস পায়নি। বুধবার ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকার সচেতন অভিভাবকগণ, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অবিলম্বে ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ড ঘটনা ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি জানান।
প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কালামসহ তার দলের লোকজন এসে তাকে বিনা কারণে গালিগালাজ করে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে বাদুরগাছা গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজ দলবল নিয়ে এসে শত শত লোকের সামনে আচমকা মারধর করতে থাকে। মারধর করার ফলে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম অচেতন হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আমিও আওয়ামী লীগের সমর্থক। বঙ্গবন্ধুর উপর আমার অনেক লেখা আছে। আমার ছাত্র-ছাত্রীর সামনে এভাবে মারধরের ফলে আমি মানসিকভাবে আহত হয়েছি।
বারবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক গোলাম সরোয়ার বলেন, আমি ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলাম। চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরপরই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ এসে প্রধান শিক্ষককে কিল, ঘুষি, চড় ও থাপ্পড় মেরে আহত করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বারবাজার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসেন বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি বেদি থেকে ফুল নামানো নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। এর বেশি কিছু হয়নি বলে তিনি জানান।
বারবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মহাবুবুর রহমান রঞ্জু বলেন, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না। পরে অন্যান্য শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে বারবাজার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসেন আমার স্কুলের প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে বলে শুনেছি। আমি এ ঘটনার তদন্তপূর্বক সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
কালীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক সমিতির (একাংশ) সভাপতি জালাল উদ্দিন জানান, বিষয়টি এমপি মহোদয়কে জানানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী রিপন বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। ছাত্রলীগের কোনো নেতা শিক্ষক লাঞ্ছনার সাথে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কালীগঞ্জ থানার ভারাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, বারবাজার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসেনের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছনার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। কিন্তু লিখিতভাবে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে তিনি জানান।