কোটচাঁদপুরের লেপ সেলাই কর্মীদের ব্যস্ততা
1 min readশীত এসে গেছে। লেপ সেলাইয়ের কর্মীদেরও নেই একদ- ফুসরত। শীতের তিন-চারটি মাস তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় যে কোনো সময়ের চেয়ে।
বাকি ৮-৯ মাস এ কাজের চাহিদা না থাকায় লেপ সেলাই কর্মীরা অন্য কাজে মনোনিবেশ করেন। কেউ নেমে পড়েন রিকশা-ভ্যান চালাতে, কেউ মাঠে দিনমজুরের কাজ নেন। আবার কেউ কেউ তাদের সুবিধামতো অন্য পেশা বেছে নেন।
কথা হয় কোটচাঁদপুর শহরের দুধসরা এলাকার লেপ ও জাজিম ব্যবসায়ী জিনারুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, বছরের অন্যান্য সময় মাসে ২-৪ জন জাজিম কিনতে আসেন। লেপের চাহিদা একেবারেই থাকে না। শীতের শুরু থেকে ৩-৪ মাস লেপ ও জাজিম বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। সব চেয়ে বেশি বিক্রি হয় লেপ। যে কারণে চাহিদার কথা মাথায় রেখে লেপ সেলাই কর্মীদের সংখ্যাও বাড়াতে হয় কয়েক গুণ।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমার এখানে ২০ জনের বেশি লেপ সেলাই কর্মী রয়েছে। অন্য সময় এ ব্যবসা ধরে রাখতে মাত্র ২-৩ জন লেপ ও জাজিম সেলাইয়ের কাজ করে থাকে। শীত মৌসুম শেষ হলেই বাকি কর্মীরা অন্য পেশায় চলে যায়। আমি পাইকারি দামে হকারদের কাছে রেডিমেড লেপ ও জাজিম বিক্রি করি। হকাররা ইনজিনচালিত আলমসাধুতে লেপ-জাজিম সাজিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিক্রি করে।’
জিনারুল জানান, ভালো মানের লেপ তৈরির অর্ডারও নেন। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি লেপ এক হাজার থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়।
একই এলাকার লেপ ও জাজিম ব্যবসায়ী আবুল বাসারও অভিন্ন কথা বলেন। সেলাই কর্মী গরিব উল্লা বলেন, ‘প্রতিদিন আমি পাঁচ থেকে ছয়টি লেপ সেলাই করি। প্রতিটি লেপে মজুরি পাই ৮০ থেকে ১০০ টাকা।’
আরেক সেলাই কর্মী জাকির হোসেন জানান, অন্তত চারটি মাস তাদের অন্য কোনো কাজের জন্য ধরনা দিতে হয় না। ছায়ায় বসে সেলাইয়ের কাজ করা বেশ সহজসাধ্য। দিন শেষে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা রোজগার হয়। শীত মৌসুম শেষে অন্য কাজে গেলে প্রতিদিন গড় রোজগার ২০০ টাকা আয় করাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। সংসার চালানো কঠিন হয়ে যায়। যে কারণে এ মৌসুমে রোজগার করে বাকি দিনগুলো চালাতে তারা ৩-৪ মাস লেপ সেলাইয়ের কাজ করেন।
কাজী মৃদুল, কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ।