ঝিনাইদহ স্বাস্থ্য বিভাগ এখন নিজেই রোগী
1 min read
জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষের চিকিৎসা কেন্দ্র ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালটি এখন নিজেই রোগী। চিকিৎসা সেবার সাথে সম্পর্কিত চারটি প্রতিষ্ঠানে লোকবলের অভাবে হাওলাদ করে চালানো হচ্ছে কার্যক্রম। ফলে নিাইদহ সদর হাসপাতলের উপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালের ডাক্তার দিয়ে নার্সিং ইন্সটিটিউট, ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আই.এইচ.টি) ও মেডিকেল এসিসট্যন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) এর ক্লাস নেওয়ার কারণে রোগীরা ঠিক মতো চিকিৎসা পাচ্ছে না। অন্যদিকে জেলা সদরের এই হাসপাতালে নেই কোন অজ্ঞানের ডাক্তার। ফলে ১০ জন সার্জন অপারেশন করতে পারছেন না। অজ্ঞানের ডাক্তারের অভাবে তুচ্ছ কারণে রোগীদের জেলার বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালটিতে স্থায়ী ভাবে কোন অজ্ঞানের ডাক্তার নেই। দু’জন অজ্ঞানের ডাক্তারকে অন্যত্র থেকে ঝিনাইদহে এনে কাজ চালানো হচ্ছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল সুত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডাঃ ইমদাদ জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ৪২টি চিকিৎসকের পদ রয়েছে। সেখানে আছে মাত্র ২৬ জন। এ সব ডাক্তার দিয়ে আবার নার্সিং ইন্সটিটিউট, ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আই.এইচ.টি) ও মেডিকেল এসিসট্যন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) এর ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, ভৌগলিক কারণে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালটি গুরুত্ব বহন করায় প্রতিদিন আউটডোর ইনডোরে আট’শ থেকে ১১’শ রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়। ২০১৬ সালে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে তিন লাখের বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
লোকবলের অভাবে প্রায় আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। দু’জন জনপ্রতিনিধি মানবিক কারণে ঝিনাইদহ ও হরিণাকুন্ডু হাসপাতালের ২৪ জন স্টাফের বেতন বহন করছেন বলেও তিনি যোগ করেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ঝিনাইদহের শিশু হাসপাতালটিও এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া নার্সিং ইন্সটিটিউট, ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আই.এইচ.টি) ও মেডিকেল এসিসট্যন্ট ট্রেনিং স্কুলেও লোকবল নেই। অভিযোগ রয়েছে ১৯৯৪ সালে নিাইদহ সদর হাসপাতালটি একশ শয্যায় উন্নীত করা হলেও এই ২৩ বছরে পুর্নাঙ্গ ভাবে জনবল নিয়োগ করা হয়নি। ফলে গোজা মিল দিয়ে সদর হাসপাতালের চিকিৎসা চলছে।
চিকিৎসকের ২৬টি পদে অনেকে আবার ক্লিনিক বানিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলে অভিযোগ। ফলে দুপুর হলেই ওই সব ডাক্তারদের দেখা মেলে না। অনেক সময় ডাক্তার সংকটের অজুহাতে হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় পচ্ছন্দের ক্লিনিকে। ঝিনাইদহ ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আই.এইচ.টি) অধ্যক্ষ ডাঃ আব্দুল খালেক জানান, তার প্রতিষ্ঠানে ৭ জন প্রভাষকের মধ্যে ৩ জন আছে।
সহকারী অধ্যাপকের ৪টি পদে আছে মাত্র ১জন। ইন্সট্রাকটরের ৭টি পদে আছে ৩ জন। সংকটের কারণে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতলের ডাক্তার দিয়ে ক্লাস নিতে হচ্ছে। ঝিনাইদহ মেডিকেল এসিসট্যন্ট ট্রেনিং স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডাঃ অসিৎ রঞ্জন দাস জানান, তার প্রতিষ্ঠানে ৭২টি পদের একটিও নেই। হাওলাদ করে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, দারকারী পদের মধ্যে এজন অধ্যক্ষ, ১ জন সিনিয়র লেকচারার, ৪ জন লেকচারার ও ২ জন মেডিকেল অফিসারের কোন পদেই লোক দেওয়া হয়নি। তিনি বিধি মোতাবেক পদ সৃষ্টি ও পদায়নের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছ বলে জানান। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুল হালিম জানান, আমরা অফিসিয়ালি ও ব্যক্তিগত ভাবে এ সব প্রতিষ্ঠানে লোকবল নিয়োগের চেষ্টা করছি।
আশা করা যায় আস্তে আস্তে সমাধান হবে। তিনি বলেন, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে বেশ কয়েকজন মেডিকেল অফিসার, সার্জারি ও রেডিওলজিষ্ট পদ শুন্য থাকায় ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ডাক্তার দিয়ে অন্যান্য সরকারী দপ্তরগুলো চালানো কথা তিনি স্বীকার করেন।”