ঝিনাইদহের জাহিদের স্বপ্ন পূরণ হবে কি?
1 min read
ঝিনাইদহ নিউজ ডেস্ক ঃ
রিকশা চালকের ঘরে জন্ম নিয়ে চরম দারিদ্রতার মধ্যে বেড়ে উঠা জাহিদ মেধা আর অধ্যবসায় দিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে। এবছর এসএসসি পরীক্ষায় সে জিপিএ ৫ পেয়েছে। এর আগে প্রাথমিক সমাপনি ও জেএসসি পরীক্ষায়ও সকল বিষয়ে এ+সহ জিপিএ-৫ অর্জন করে। জাহিদ হাসান কালীগঞ্জ উপজেলার রঘুনাঘপুর গ্রামের শাজাহান আলীর ও জাহানাা বেগমের বড় ছেলে। জিপিএ-৫ পেয়ে মুখে হাসি নেই তার। কারণ কলেজে ভর্তি, বই ও জামা কাপড় কিনতে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হবে কিন্তু বাবার স্বল্প আয়ে সংসার চালিয়ে এতো টাকা যোগাড় করবো কোথা থেকে।
জাহিদ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এই সাফল্য অর্জন করেছে। সে এই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সকল বিষয়ে এ+সহ জিপিএ-৫ পাওয়ায় দারুন খুশি পরিবারসহ প্রতিবেশি ও স্কুলের শিক্ষকরা।
জাহিদের বাবা শাহাজাহান আলী জানান, নিজে রিকসা চালক। প্রতিদিন নিজ গ্রাম থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দুরে যশোরে গিয়ে রিক্সা চালান। সারা দিনে যা আয় করেন তা সংস্কার চালাতেই খরচ হয়ে যায়। জমা জমি বলে আছে মাত্র ৫ শতাংশ জমিতে একটি এক রুমের ঝুপড়ি ঘর। তিনি বলেন, রোগ-শোক আর অভাব অনাটনের সংসারে দুবেলা ঠিক মতো সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিয়ে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছে অনেক কষ্টে।
জাহিদের মা জাহানারা বেগম জানান, তার আরো একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। জাহিদকে ঠিকমতো জামা-কাপড় কিনে দিতে পারেনি। তবে কখনো সে কোন অভিমান বা অভিযোগ করেনি। এখন তার ভালো ফলাফল আমাদের চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ কলেজে ভর্তি, বই ও জামা কাপড় কিনতে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হবে কিন্তু সংসার চালিয়ে এতো টাকা যোগাড় করবো কোথা থেকে বলছিলেন জাহিদের মা জাহানারা বেগম।
জাহিদদের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, গ্রামের এক বাড়িতে প্রাইভেট পড়াতে গেছে জাহিদ। প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষার পর বাড়িতে আসে সে। জিজ্ঞাসা করতেই সে জানায়, ভর্তির টাকা যোগাড়ে বাবাকে সহযোগীতা করতে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেছি।
জাহিদ হাসান জানায়, আমার ইচ্ছে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে দেশসেবা করতে চাই। এছাড়া আমার বাবা-মা ও পরিবার সহ এলকার পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। আমার দরিদ্র বাবা মার মুখে হাসি দেখতে চাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান জানান, জাহিদ বিজ্ঞানের ছাত্র হিসাবে বরাবরই ভালো ছিল। তার আচরণ চলাফেরা ছিল সবার থেকে ভিন্ন। আমি জাহিদকে কখনোই স্কুল ফাঁকি দিতে দেখিনি।