ঝিনাইদহের মরমী কবি পাগলা কানাইয়ের ২০৭ তম জন্মজয়ন্তী
1 min readজিন্দা দেহে মুরদা বসন, থাকতে কেন পরনা, মন তুমি মরার ভাব জান না, মরার আগে না মরিলে পরে কিছুই হবে না/ আমি মরে দেখেছি, মরার বসন পরেছি, কয়েকদিন বেঁচে আছি, তোরা দেখবি যদি আয় পাগলা কানাই বলতেছি।’ এমন শত শত গানের স্রষ্টা মরমী কবি পাগলা কানায়ের ২০৭ তম জন্ম জয়ন্তী বৃহস্পতিবার। এ উপলক্ষে কবির মাজার প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে ৩ দিন নানা অনুষ্ঠান। কমসূচীর মধ্যে রয়েছে অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে কবির মাজারে পুষ্পমাল্য অপর্ণ, মিলাদ মাহফিল, লাঠিখেলা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও লোক সংগীত অনুষ্ঠান। ২য় দিনের অনুষ্ঠানে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লোক সংগীত ও নাটক। শেষ দিন আগামী ১১ মার্চ শনিবার রয়েছে কৌতুক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও পালাগানের প্রতিযোগীতা। পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদ এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
জানা যায়, লোক-সাধনা ও মরমী সঙ্গীতের এ কবি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে বাংলা ১২১৬ সালের ২৫ ফাল্গুন জন্মগ্রহণ করেন এবং বাংলা ১২৯৬ সালের ২৮ আষাঢ় মুত্যবরণ করেন।
জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই তিনি দূরন্ত ও আধ্যাত্মিক স্বভাবের ছিলেন। বাল্যকালে পিতৃহারা পাগলা কানাইয়ের ঘরে মন না টেকায় এবং অর্থের অভাবে পড়ালেখা হয়নি। তিনি মানুষের বাড়ি রাখালের কাজ করেছেন। গরু চরাতে গিয়ে ধুয়ো জারি গান গাইতেন। নিরক্ষর হলেও তার স্মৃতি, মেধা ছিল প্রখর। তিনি উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে গান রচনা করে নিজ কন্ঠে পরিবেশন করতেন। তার সঙ্গীতে যেমন ইসলাম ধর্মেরও তত্বকে প্রচার করেছেন তেমনি হিন্দু-পুরান রামায়ণ ও মহাভারত থেকেও নানা উপমায়ের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। এ কারণেই তার গান সর্বজনীনতা লাভ করে। তার মধ্যে বাউল ও কবিয়াল এ দুয়ের যথার্থ মিলন ঘটেছে।