বিলুপ্তির পথে বেত শিল্প
1 min readকেউ কাটছেন বাঁশ, কেউ তুলছেন পাতলা চটা, আবার ওই চটা শুকিয়ে লাল সবুজ রং লাগাতে কেউ ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাকীরা ওই রং বে-রংয়ের চটা দিয়ে কুলা, ঝুড়ি, পেঁতে ঝুড়ি, শরপোস, ডালা বুনছেন নিপুণ হাতে। এটা হচ্ছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার জয়দিয়ার বেত পল্লীর চিত্র।
বাবুজি আমরা এখন খুবই দুঃখ কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। আগে আমাদের এ বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করে মোটামুটি খেয়ে পড়ে ভালই কাটতো। এখন এ কাজে সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বাপ দাদার ব্যবসা তাই কষ্ট হলেও ধরে আছি। জানালেন সত্তর বছরের শ্রীমন্ত বেত।
মনো বেত নামে আরেক কারিগর জানান, এ শিল্প তৈরি হয় শুধু বাঁশ দিয়ে। ফাঁপা বাঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন গৃহস্থলির জিনিসপত্র।
তিনি আরো জানান, একদিকে অভাবের তাড়না অন্যদিকে এ শিল্পের উপকরণ পেতে আমাদের এলাকা ছাড়তে হয়। যে কারণে সন্তানদের লেখাপড়া শেখানোর ইচ্ছা থাকলেও তা পারি না।
বাসুদেব বেত (৪৫) বলেন, আমরা এখানে একত্রে হস্তশিল্পের সামগ্রী তৈরি করে বিভিন্ন বাজারে পাইকারি বিক্রি করে থাকি। পাশাপাশি কাছে কোনো মেলা বসলে আমরা নিজেরাও সেখানে কিছু বাড়তি পয়সার আসায় খুচরা দামে এ মালামাল বিক্রি করে থাকি।
বর্তমানে প্লাস্টিকের সামগ্রী বাজার ছেয়ে যাওয়ার আগের মতো এ হস্তশিল্প বিক্রি হয় না। তারপর আবার এ হস্তশিল্পে ব্যবহৃত বাঁশ ক্রমেই বিলুপ্ত হচ্ছে। সেই সঙ্গে দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এ হস্তশিল্পের কাজ ধরে রাখা কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে।