Sun. Dec 22nd, 2024

ঝিনাইদহ নিউজ

সবার আগে সর্বশেষ

মাগুরায় কাত্যায়নী পূজা শুরু

1 min read

 

images-1-23
মাগুরায় কাত্যায়নী পূজা শুরু

 

 

 

ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে  রোববার থেকে শুরু হচ্ছে মাগুরার ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা। শত বছরের পুরোনো এ পূজা চলবে পাঁচ দিন। হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা হলেও এটি সর্বজনীন প্রাণের উৎসবে রূপ নেয়।

পূজা উপলক্ষে এরই মধ্যেই গোটা শহরকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। পূজামণ্ডপ এলাকাসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা করা হয়েছে দৃষ্টি নন্দন তোরণ, প্যান্ডেল। পূজামণ্ডপসহ শহরে করা হয়েছে চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা। পূজামণ্ডপগুলো তৈরি করা হয়েছে প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্থাপত্যকলার আদলে। দেশ-বিদেশের কয়েকশ পটুয়া শিল্পী প্রায় এক মাস পরিশ্রম করে এসব প্রতিমা, মণ্ডপ ও পূজার আনুষঙ্গিক সাজসজ্জা করেছেন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা হলেও মাগুরায় এর ব্যতিক্রম। মাগুরায় কাত্যায়নী পূজাই বেশি জাঁকজমক হয়। উপমহাদেশে কেবল মাগুরাতেই এত জাঁকজমকপূর্ণভাবে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর জেলায় মোট ৮৪টি মণ্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে পূজার মূল আকর্ষণ থাকবে পৌরসভা এলাকার জামরুলতলা, নতুনবাজার, ছানার বটতলা, বাটিকাডাঙ্গা, সাতদোহা, নিজনান্দুয়লী, পারনান্দুয়ালীসহ শহরের ১১টি মণ্ডপে।
প্রতিবছর শারদীয় দুর্গাপূজার এক মাস পরেই মাগুরাতে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ১০ নভেম্বর পর্যন্ত পূজা চলবে। তবে এ উপলক্ষে আয়োজিত মেলা চলবে আরও প্রায় দুই সপ্তাহ। মেলায় সুই সুতা থেকে শুরু করে সবকিছু পাওয়া যায়। কাঠের আসবাব, খেলনা, পুতুলনাচসহ গ্রামীণ ঐতিহ্যের নানা আয়োজন থাকে। দেশের দূরদূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে মেলায় তাঁদের পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
মাগুরা জেলা কাত্যায়নী পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি পঙ্কজ কুণ্ডু জানান, ব্রিটিশ আমলে শহরে পারনান্দুয়ালি এলাকার সতীশ মাঝি নামের এক ব্যক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম এ পূজা শুরু করেন। পেশায় তিনি ছিলেন মুদি দোকানি। সেই থেকেই জেলার মানুষের অন্যতম উৎসবে পরিণত হয়েছে এই পূজা। আশির দশকে এ পূজা কেবল মাগুরা শহরের ছানার বটতলা, নিজনান্দুয়ালি, নতুন বাজার, বাটিকাডাঙ্গা ও জামরুলতলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু গত দুই যুগে এর ব্যাপ্তি যেমন বেড়েছে, সংখ্যাও বেড়েছে অনেক।
নতুন বাজার স্মৃতি সংঘ কাত্যায়নী পূজা কমিটির সদস্য পীযূষ বসাক বলেন, বিগত সব বছরে তুলনায় এবার বড় পরিসরে পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
দেবী দুর্গার একটি বিশেষ রূপ কাত্যায়নী। তিনি নবদুর্গা নামে পরিচিত। শাস্ত্রমতে, দ্বাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের জন্মের আগে গোপবালারা শ্রীকৃষ্ণকে ঈশ্বর, বন্ধু, স্বামী, পুত্র হিসেবে আরাধনা করতেন। তাঁদের এক মাসব্যাপী আরাধনা সে সময় কাত্যায়নী পূজা হিসেবে চিহ্নিত হতো। এর সময়কাল ছিল কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস। প্রতিমা স্থাপন থেকে শুরু করে দুর্গাপূজার আদলেই সবকিছু হতো। তবে অতিরিক্ত হিসেবে দেবী দুর্গার কোলে শ্রীকৃষ্ণের একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়। যার অর্থ দেবী দুর্গার আরাধনার মাধ্যমে কৃষ্ণের সান্নিধ্য পাওয়া।
মাগুরায় এই বর্ণিল পরিবেশের পূজা উৎসবে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লাখ লাখ দর্শনার্থীর পাশাপাশি নেপাল, ভারত ও অন্য দেশ থেকে বহু দর্শনার্থী ছুটে আসেন। এরই মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে পূজা দেখতে আত্মীয়স্বজন ভিড় জমিয়েছেন।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূজা দেখতে আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *